পুরো বিশ্বের বাজারেই বাংলার মিষ্টির স্বাদের মাহাত্ম্য পৌঁছে দিতে চেষ্টায় কোনো খামতি রাখছেন না বর্ধমানের মিষ্টি ব্যবসায়ীরা। জিআই প্রাপ্ত মিহিদানার পর এবার বাহারিনে যাচ্ছে সীতাভোগও। এমনকী পরীক্ষামূলকভাবে পাঠানো হচ্ছে বিখ্যাত শক্তিগড়ের ল্যাংচাও। বর্ধমানের সীতাভোগ মিহিদানা ট্রেডার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে এবার ২৫ কেজি সীতাভোগ ও ২৫ কেজি মিহিদানা পাঠানো হচ্ছে বাহারিনে। মঙ্গলবার ভোরে সীতাভোগ, মিহিদানা ও ল্যাংচা উড়ে যাবে বাহারিনের আলজাজিরা স্টোরে। পুজোর আবহে বাহারিনবাসীর মুখ মিষ্টি করার জন্য সেখানে স্থান পাবে বর্ধমানের মিঠাই।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার প্রথমবার মিহিদানা পৌঁছে গিয়েছিল বাহারিনে। সেই মিষ্টি এতটাই প্রশংসিত যে, ফের অর্ডার এসেছে মিহিদানার। প্রথমবার পরীক্ষামূলকভাবে ১২ কেজি মিহিদানা পাঠানো হয়। সেই মিহিদানার অপূর্ব স্বাদ ও গন্ধে ফের অর্ডার এসেছে ২৫ কেজির। তবে, এই প্রথমবার বাহারিন যাচ্ছে সীতাভোগ, সঙ্গী হয়েছে ৫০ পিস ল্যাংচাও। মঙ্গলবার ভোর রাতে মোট ৬০টি প্যাকেটে পাড়ি দেবে বর্ধমানের প্রসিদ্ধ তিন মিষ্টি। যার মধ্যে ৪০টি কম্বো প্যাকেট। যেখানে ২০০ গ্রাম করে সীতাভোগ ও মিহিদানা থাকবে। বাকি শুধু ১০ প্যাকেটে যাবে সীতাভোগ। আর ১০টি প্যাকেটে পাঁচটি করে ল্যাংচা পাড়ি দেবে বাহারিনে। দ্য এগ্রিকালচারাল প্রসেসড ফুড প্রোডাক্ট এক্সপোর্ট ডিপার্টমেন্টের (আপেডা) সহযোগিতায় এই মিষ্টি পাড়ি দিয়েছে বিদেশে। প্রাথমিকভাবে মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ান দেশগুলিকে রপ্তানি করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান বর্ধমান সীতাভোগ মিহিদানা ট্রেডার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের ব্যবসায়ীরা।
এপ্রসঙ্গে অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রমোদ কুমার সিং বলেন, “প্রথমবার ৩০টি প্যাকেটে মিহিদানা পাঠিয়েছিলাম। আপেডা আমাদের সুযোগ করে দিয়েছে। এবার যাচ্ছে সীতাভোগের প্যাকেট। শুধু সীতাভোগ নয়, বাহারিনে মিহিদানার ব্যাপক চাহিদার খবর আসছে। তাই সীতাভোগ ও মিহিদানা মিলিয়ে ৫০ কেজি মিষ্টি পাঠানো হচ্ছে। পঞ্চাশটি ল্যাংচা পরীক্ষামূলকভাবে পাঠানো হচ্ছে। আগামীদিনে ইউরোপীয় দেশগুলিতে বর্ধমানের মিষ্টি রপ্তানির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।” সহ সম্পাদক দেবাদিত্য চক্রবর্তী বলেন, “বর্ধমানের জিআই প্রাপ্ত মিষ্টি প্রতিনিয়ত রপ্তানি করতে চাইছি আমরা। গত সপ্তাহে বাহারিনে পাঠানোর পর, ওখান থেকে যেভাবে ২৫ কেজি অর্ডার এসেছে, তাতে আমরা আশাবাদী আগামী দিনে আমরা প্রতি সপ্তাহে আরও বেশি পরিমাণ রপ্তানি করতে পারব।” বিদেশিদের মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতা কিছুটা কম। তাই সীতাভোগ মিহিদানাতে যদি কিছুটা মিষ্টির পরিমাণ কমানো যায়, সে ব্যাপারে আগামীতে ভাবনা চিন্তা করবেন সীতাভোগ ও মিহিদানা প্রস্তুতকারীরা। তবে সবটাই ভিনদেশের বাসিন্দাদের চাহিদা অনুযায়ী। জি আই প্রাপ্ত মিষ্টির আসল স্বাদ দিতে আপাতত একই মিষ্টি বাহারিনবাসীর মুখে তুলে দিচ্ছেন তাঁরা। মঙ্গলবার কলকাতা থেকে পাড়ি দেওয়ার পর বুধবারই নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে যাবে এই মিষ্টি। আগামী ১২ দিন পর্যন্ত এই মিষ্টির স্বাদ নিতে পারবেন বাহারিন নিবাসী।