কাবুল দখলের পরেই সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তালিবান সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রধান এমানুল্লা সামাগনি বলেছিলেন, ‘শরিয়তি আইনের পরিধির মধ্যে থেকে যদি মহিলারা প্রশাসন ও সরকারে অংশ নিতে চান তাঁদের স্বাগত।’ কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই ভোল বদলে মহিলাদের অধিকার প্রসঙ্গে তারা ফিরে গিয়েছে তিন দশক আগের অবস্থানেই। এবার যেমন মাসকয়েকের ব্যবধানে ফের মহিলাদের প্রতিবাদ মিছিলে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠল তালিবানের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার পূর্ব কাবুলের এক স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন কয়েকজন মহিলা। তাঁদের দাবি ছিল, অবিলম্বে স্কুল চালু করতে হবে। এবং মেয়েদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।
সংবাদসংস্থা এএফপির খবর, বিক্ষোভে হঠাৎই শূন্যে কয়েক রাউন্ড গুলি চালায় তালিবান যোদ্ধারা। ছিনিয়ে নেওয়া হয় তালিবান বিরোধী ব্যানারও। এদিনের বিক্ষোভের খবর সংগ্রহ করতে গিয়েও তালিবানের হাতে কয়েকজন বিদেশি সাংবাদিক নিগৃহীত হন বলেও অভিযোগ। তাঁদের রাইফেলের বাঁট দিয়ে আঘাত করা হয় বলে দাবি। এ প্রসঙ্গে এক তালিবান নেতা জানিয়েছেন, প্রতি দেশের মতো এই দেশেও প্রতিবাদ করার অধিকার আছে। কিন্তু কোনও বিক্ষোভ, প্রতিবাদ দেখাতে হলে প্রথমে অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন। এদিন স্কুলের সামনে বিক্ষোভে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি।
প্রসঙ্গত, ‘আমাদের কলম ভেঙে দেওয়া যাবে না, আমাদের বই পুড়িয়ে দেওয়া চলবে না, আমাদের স্কুল এখনই খুলতে হবে’, এই ব্যানার হাতে এদিন বন্ধ ওই স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখান কয়েকজন মহিলা অভিভাবক। তাঁদের দাবি, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে অশান্তিতে উসকানি দেয় তালিবান। মহিলাদের হঠাতে শূন্যে গুলি চালায়। উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে তালিবান। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে পড়ুয়া, শিক্ষিকা বা শিক্ষাকর্মী, কোনও মহিলাই আর ঢুকতে পারবেন না সেখানে। আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে এহেন তালিবানি ফতোয়ায় দেশে মহিলাদের শিক্ষা ও অধিকার নিয়ে বড়সড় অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। তার মধ্যেই ফের মহিলাদের মিছিলে গুলি চালিয়ে তালিবান প্রমাণ করে দিল, তাদের কোনও পরিবর্তন হয়নি।