শুধু গত মাসেই গোটা দেশজুড়ে কাজ খুইয়েছেন ১৫ লক্ষ মানুষ। উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআইই-র এই পরিসংখ্যান সামনে আসতেই বেকারত্ব ইস্যু নিয়ে মোদী সরকারকে ফের নিশানা করলেন রাহুল গান্ধী। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ওই খবর টুইট করে শুক্রবার প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতির তোপ, ‘মোদী সরকার কাজের সুযোগ তৈরির পক্ষে ক্ষতিকারক।’ পাশাপাশি, তাঁর কটাক্ষ, ‘এই সরকার ‘বন্ধু’ নয়, এ রকম কারও জন্য ব্যবসা বা কর্মসংস্থান বৃদ্ধির আশ্বাস দেয় না। উল্টে যাঁদের চাকরি আছে, তাঁদের থেকেও তা ছিনিয়ে নিতে চায়। দেশবাসীর জন্য শুধু অপেক্ষা করে থাকে আত্মনির্ভরতার ভড়ং।’
প্রসঙ্গত, সিএমআইই-র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অগস্টে দেশে বেকারত্বের হার ৮.৩২ শতাংশ। ঠিক আগের মাস জুলাইয়েও তা ছিল ৬.৯৬ শতাংশ। শুধু গত মাসেই নতুন করে কাজ হারিয়েছেন ১৫ লক্ষ জন। কাজ না-থাকা মানুষের সংখ্যা বেড়েছে সর্বত্র। শহরে বেকারত্বের হার ৮.৩২ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৯.৭৮ শতাংশ। আর গ্রামীণ এলাকায় ৬.৩৪ শতাংশ থেকে ৭.৩৪ শতাংশ। এই পরিসংখ্যান তুলে ধরে রাহুলের প্রশ্ন, বছরে দু’কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিল্লীর মসনদ দখল করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। ফি বছরে সেই দু’কোটি কাজের কী হল?
এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির হার ২০.১ শতাংশ হতেই মোদী সরকারের দাবি, ঘুরে দাঁড়াচ্ছে অর্থনীতি। কিন্তু কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা বলছেন, ২০২০ সালের এপ্রিল-জুনে দেশ জোড়া লকডাউনের কারণে ২৪ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়েছিল দেশের অর্থনীতি। তার সাপেক্ষ হিসেব হওয়ার কারণেই এবার এত চড়া দেখাচ্ছে বৃদ্ধির হারকে। কংগ্রেসের প্রশ্ন, বৃদ্ধির হার যদি এতই চড়া, অর্থনীতির হাল এতই ভাল, তা হলে কর্মসংস্থানের দশা এমন বেহাল কেন? সাত বছর আগে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে প্রতি বছর ‘নিয়ম করে’ ৮%-১০% বৃদ্ধি এবং ২ কোটি কাজের সুযোগ তৈরির স্বপ্ন ফেরি করেছিলেন মোদী। কিন্তু তথ্য বলছে, তাঁর জমানায় বেকারত্বের হার সাড়ে চার দশকে সর্বোচ্চ।
নতুন কাজের সুযোগ তৈরি হওয়া তো দূর, উল্টে নোটবন্দী থেকে লকডাউন পর্যন্ত বিভিন্ন ‘কড়া সরকারি পদক্ষেপে’ চাকরি গিয়েছে কয়েক কোটি। সিএমআইই-র সমীক্ষাতেই জানানো হয়েছে, শুধু এপ্রিল থেকে আগস্টের মধ্যেই ২ কোটির বেশি বেতনভোগী ভারতীয় কাজ হারিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে টুইটে বেকারত্ব বা চাকরি হারানোর কারণে আত্মহত্যার একাধিক খবরও তুলে ধরেছেন রাহুল। তাঁর মতে, এই মুহূর্তে দেশে সব থেকে বড় ও জ্বলন্ত সমস্যা বেকারত্ব। কাজের সুযোগ বাড়াতে কেন্দ্রকে তাঁর পরামর্শ, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিক্রি না-করা, মাঝারি ও ছোট শিল্পকে আর্থিক সহায়তা করা ও শুধু ‘বন্ধু’ শিল্পপতিদের বদলে দেশের মানুষের কথা ভাবা।