রাতের কলকাতায় মহিলাদের নিরাপত্তায় নজরদারি চালিয়ে প্রথম থেকেই সব মহলের প্রশংসা কুড়িয়েছে কলকাতা পুলিশের বিশেষ মহিলা বাহিনী ‘উইনার্স’। পুজোর সময়ে উইনার্সের কাজে খুশি হয়ে ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এবার ওই বাহিনীকেই মুখ্যমন্ত্রীর যাত্রাপথের নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কলকাতা পুলিশ সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। কলকাতার যে থানা এলাকা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যাচ্ছেন, সেখানকার নিরাপত্তার বন্দোবস্ত এবং মুখ্যমন্ত্রীর নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশিই রাখা হচ্ছে এই নারী বাহিনীকে।
লালবাজার সূত্রে খবর, গত ২৫ আগস্ট থেকে এই নতুন দায়িত্ব পেয়েছেন উইনার্স বাহিনীর সদস্যেরা। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আপাতত এমন ভাবেই চলার কথা। ৬ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রী শহরের বাইরে যেতে পারেন। তিনি ফিরে এলে ফের মুখ্যমন্ত্রীর পথের দায়িত্ব ফিরতে পারে উইনার্স বাহিনীর কাঁধে। পুলিশের এক কর্তা জানান, মূলত কালীঘাট থেকে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর যাতায়াতের পথে রাখা হচ্ছে ওই বাহিনীকে। এছাড়া তিনি শহরের মধ্যে কোথাও গেলে সেই পথে বা শহরের বাইরে যাওয়ার হলে শহরের সীমানা পর্যন্ত সঙ্গ দিচ্ছে উইনার্স।
বাহিনীর এক সদস্য বলেন, ‘মূলত হেস্টিংস থেকে আলিপুর হয়ে যাতায়াতের পথে প্রতিটা বিটে আমাদের দু’জনকে রাখা হচ্ছে। প্রতিদিন আলিপুর থানার ওসি আমাদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিচ্ছেন। বুধবারও তেমন ভাবেই ডিউটি ছিল। পানাগড় থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সে দিন ফিরতে সন্ধ্যা ছ’টা বেজে গিয়েছিল। আমরা পথেই ছিলাম। রাস্তায় কেমন লোক রয়েছেন এবং মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্তটাই নজর করা ছিল আমাদের কাজ।’
প্রসঙ্গত, রাজীব কুমার পুলিশ কমিশনার থাকাকালীন ২০১৮ সালের ১১ জুলাই আত্মপ্রকাশ ঘটে উইনার্সের। মূলত সন্ধ্যায় এবং রাতের পথে মহিলাদের নিরাপত্তা দেখার জন্যই কলকাতা পুলিশের এই বিশেষ মহিলা বাহিনী জন্ম। ২০১৮-র মার্চ মাস থেকে পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে বাছাই করা মহিলা পুলিশকর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে এই বাহিনী গঠন করা হয়। মোটরবাইকে সওয়ার এই বাহিনী মার্শাল আর্টসের পাশাপাশি আধুনিক সব আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারেও রীতিমতো সিদ্ধহস্ত। তিন জন অফিসারের পাশাপাশি বাহিনীতে রয়েছেন আরও ৩৩ জন মহিলা পুলিশকর্মী। গত ৩ বছরে শহরের একাধিক জায়গায় হানা দিয়ে তিনশোর বেশি লোককে গ্রেফতার করেছেন তাঁরা।
