এবার উৎসশ্রী পোর্টালের মাধ্যমে আবেদন করা শিক্ষকদের বদলির সুপারিশপত্র ছাড়া শুরু করল স্কুল সার্ভিস কমিশন। সোম এবং মঙ্গলবার বেশ কিছু শিক্ষকের চিঠি ছাড়া হয়েছে। তাতে সই রয়েছে কমিশনের সচিব আবদুল গনির। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই পোর্টালের কথা ঘোষণা করেন। ৩১শে জুলাই তা উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তা ফল দিতে শুরু করেছে। যদিও, শিক্ষক নেতা অনিমেষ হালদার, চন্দন গড়াই, কিঙ্কর অধিকারীরা অবশ্য এ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, এখনও আবেদনের প্রক্রিয়া চলছে।
প্রসঙ্গত, শিক্ষকদের একটা বড় অংশ এ ব্যাপারে খুশি। অন্যদিকে, বাপি প্রামাণিক সহ অন্যান্য শিক্ষক নেতারা শিক্ষা কমিশনারেরও দ্বারস্থ হয়েছিলেন বেশ কিছু ইস্যুতে। জুনিয়র হাইস্কুলের শিক্ষকরা বদলির আবেদনের সুযোগই পাচ্ছেন না। কারণ, নিউ সেট আপ স্কুলগুলিতে কোথায় দু’জন, কোথাও তিনজন করে শিক্ষক রয়েছেন। যেখানে ১০ শতাংশ শিক্ষককে ছাড়া সম্ভব নয়। এই কারণে প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষক আবেদনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। একই সমস্যা বহু উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকদের। কারণ সেগুলিতে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষকের সংখ্যা একজন। তাই তাঁদের পক্ষে আবেদন করা সম্ভব নয়। ন্যূনতম পাঁচবছর চাকরির মেয়াদের শর্তটি পোর্টাল থেকে তুলে দেওয়া হলেও অনেক এসআই বা ডিআই আপত্তি তুলছেন এই বলে যে এ জাতীয় কোনও অর্ডার শিক্ষাদপ্তরের তরফে দেওয়া নেই।
পাশাপাশি, একই সমস্যা হচ্ছে শিক্ষাকর্মীদেরও। তাঁদের আবেদনের সুযোগ দেওয়া হলেও সুনির্দিষ্ট নির্দেশিকা না থাকায় ভুগতে হচ্ছে তাঁদের। এছাড়াও, সিনিয়রিটি নির্ধারণ নিয়েও ধন্দ রয়েছে। চাকরির মেয়াদ নাকি বয়স, কোনটা সিনিয়রিটি নির্ণয়ে গ্রাহ্য হবে, তা নিয়ে দ্বিমত তৈরি হয়েছে শিক্ষাকর্তাদের মধ্যে। কারণ, ২০১৫ সালের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, অগ্রাধিকার পাবে বয়স। তবে, উৎসশ্রী পোর্টাল নিয়ে সম্প্রতি যে প্রশিক্ষণ হয়, তাতে বলা হয়েছিল, অগ্রাধিকার দিতে হবে বয়সের মেয়াদকে। যদি, দু’জন শিক্ষকের চাকরির মেয়াদ এবং অন্যান্য বিষয় একই হয়ে যায়, তবে বয়স মিলিয়ে দেখতে হবে। তবে, এ বিষয়ে কোনও নির্দেশিকা কিন্তু প্রকাশিত হয়নি। সুনির্দিষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা না থাকায় বঞ্চিত হচ্ছেন বেশ কিছু বিশেষভাবে সক্ষম শিক্ষকও। তাই, সুনির্দিষ্ট নির্দেশিকার দাবি উঠছে শিক্ষকদের তরফে। অনেকেই বলছেন, চাকরির মেয়াদ বা বয়সের সঙ্গে দূরত্বের মাত্রাও মাপকাঠিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হোক। যদিও, তা নিয়ে দ্বিমতও রয়েছে। বিকাশ ভবনের এক আধিকারিক বলেন, পুরো প্রক্রিয়াটি নতুন। নিরন্তর পরিবর্তনর মাধ্যমেই নিখুঁত হয়ে উঠবে বদলি প্রক্রিয়া। চলছে সেই কাজও।