সম্প্রতি কসবার ভ্যাকসিন কাণ্ডে ধৃত ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জনের সঙ্গে আইনজীবী সনাতন রায়চৌধুরীর যোগসূত্র মিলল। জানা গিয়েছে, কলকাতা পুরসভায় চাকরির জন্য দেবাঞ্জনের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে যোগাযোগ করেছিলেন প্রতারক সনাতন। সনাতন-দেবাঞ্জন যোগ প্রকাশ্যে আসায় এই নিয়ে আলাদা করে তদন্ত শুরু হয়েছে। পাশাপাশি ২০১৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত ব্রিকস সামিটে যাওয়ার যে দাবি সনাতন করেছেন, তা জানতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে কলকাতা পুলিশ।
এই তদন্তে জানা গিয়েছে, একাধিক যুবক-যুবতীকে কলকাতা পুরসভা সহ সরকারি জায়গায় চাকরি পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন সনাতন। তালতলা থানায় রুজু হওয়া মামলার সূত্র ধরে পুলিশ জেনেছে, এ নিয়ে সনাতন ও শাসকদলের শ্রমিক সংগঠনের এক নেতা দেবাঞ্জনের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। এমনকী চাকরিপ্রার্থীদের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে দেবাঞ্জনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন সনাতন। প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, দেবাঞ্জনের অফিসে প্রায়ই যেতেন তিনি। এমনকী ওই শ্রমিকনেতার অফিসেও সনাতন ও দেবাঞ্জন একসঙ্গে বৈঠক করেছেন একাধিকবার। দেবাঞ্জনের সঙ্গে সনাতন কোথায় কোথায় গিয়েছেন, ভুয়ো টিকা শিবিরে হাজির হয়েছিলেন কি না, তা নিয়ে তাঁকে জেরা করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, পুরসভার কাজের বরাত পাইয়ে দেওয়া, পুরসভার সঙ্গে বিভিন্ন মামলায় সেটিং করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিতেন তিনি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিনিধি হিসেবে ব্রিকস সামিটে গিয়েছিলেন সনাতন। এমন দাবি করেছেন তিনি নিজেই। যেখানে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। সত্যিই তিনি গিয়েছিলেন কি না, গেলে কী পরিচয়ে গেলেন, তাঁকে শংসাপত্র কে দিয়েছিলেন, তা জানার চেষ্টা চলছে। স্বভাবতই সনাতনের প্রভাবশালী যোগের বিষয়টি উঠে আসছে। তা না হলে ব্রিকস সামিটে তাঁর উপস্থিত থাকার কথা নয়। ওই সামিটে অতিথির তালিকা হাতে পেলেই স্পষ্ট হবে, তিনি সেখানে গিয়েছিলেন কি না। বিজেপির বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগের তথ্য উঠে আসছে। তাঁদের ধরেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে যাতায়াত করতেন এই প্রতারক। কীসের বিনিময়ে ওই নেতারা সনাতনকে এই সুবিধা পাইয়ে দিয়েছিলেন, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ২০০৯ সালে তিনি দমদম লোকসভা কেন্দ্র থেকে লোকজনশক্তি পার্টির প্রার্থী হন। কীভাবে ওই দলের প্রার্থী হয়েছিলেন, তা নিয়েও চলছে তদন্ত।