রাফায়েল কেলেঙ্কারি নিয়ে ফ্রান্সে বিচারবিভাগীয় তদন্ত শুরু হতেই বদলাতে শুরু করেছে ভারতের রাজনৈতিক সমীকরণ। কেন্দ্রের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে জোর গলায় রাফাল চুক্তিতে দুর্নীতির অভিযোগে সুর চড়ানো শুরু করেছে কংগ্রেস। এর আগেই যৌথ সংসদীয় কমিটির তদন্ত দাবি করেছে হাত শিবির। আর এবার নাম না করে সোশ্যাল অস্ত্রে শান দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করলেন রাহুল গান্ধী। অন্তত এমনটাই বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
আজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ওয়ানাডের কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী একটি ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘চোরের দাড়ি’, হ্যাশট্যাগ রাফাল দুর্নীতি। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এ ক্ষেত্রে চোরের দাড়ি বলতে তিনি প্রধানমন্ত্রীর দাড়িকেই বুঝিয়েছেন। তবে প্রধানমন্ত্রীকে এহেন বেনজির আক্রমণের পাল্টা দিতে ছাড়েননি বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য। পাল্টা টুইটে অমিত লিখেছেন, “২০১৯ সালে আপত্তিজনক মন্তব্যের পর রাহুল গান্ধী এ বার এত নীচে নেমে গিয়েছেন।”
গত এপ্রিলে একটি ফরাসি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল, চুক্তিতে মধ্যস্থতাকারী একটি সংস্থাকে বড় অঙ্কের টাকা ‘উপহার’ দিয়েছে রাফাল নির্মাণকারী সংস্থা দাসো। যদিও দাসো দাবি করেছিল, ১.১ মিলিয়ন ইউরো (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৯ কোটি টাকা) ভারতীয় একটি সংস্থাকে তারা দিয়েছে রাফালের রেপ্লিকা নির্মাণের জন্য। এই বিতর্ক প্রথমবার উস্কে দিয়েছিল ফরাসি দুর্নীতি দমন শাখা। দাসোর অডিটে এই বেনিয়ম ধরা পড়েছিল বলে দাবি করেছিল ফরাসি সংবাদমাধ্যম। তাদের দাবি অনুযায়ী, দাসোর কাছ থেকে ‘উপহার’ হিসেবে বড় অঙ্কের টাকা পেয়েছিল অগস্টাওয়েস্টল্যান্ড চপার স্ক্যামের সঙ্গে যুক্ত সুশেন গুপ্তার সংস্থা।
এরপরই ভারত ও ফ্রান্সের এই রাফাল চুক্তিতে দুর্নীতির অভিযোগে জোর গলায় সরব হয় বিরোধীরা। তখনই প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিবৃতি দাবি করেছিল কংগ্রেস। কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সুরেজওয়ালা সেইসময় দাবি করেছিলেন, “ভারতীয় সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা চুক্তির বিষয়ে একটি নিরপেক্ষ স্বাধীন তদন্ত হওয়া কি উচিত নয়? যদি কোনও ঘুষ দেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে সেটা কত, সেটা কি জানা প্রয়োজন নয়?” এরপর গত জুন মাসের ১৪ তারিখ একটি বেসরকারি সংগঠনের অভিযোগের ভিত্তিতে ফ্রান্সে শুরু হয় রাফাল চুক্তির তদন্ত। জুলাই মাসের ২ তারিখ এক বিচারপতির তত্ত্বাবধানে বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেয় ফরাসি সরকার। তারপর থেকেই ভারতে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সরব কংগ্রেস।