বাংলায় এসে কখনও ‘বিবেকানন্দ ঠাকুর’ বলে বা কখনও শ্রী চৈতন্যের দীক্ষা প্রসঙ্গে ভুল দাবি করে লোক হাসিয়েছেন তিনি। এবার রাজ্য বিজেপির বৈঠকে ভাষণ দিতে গিয়ে বাংলার তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা, তার কতটা সত্যি বা তথ্যভিত্তিক, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল।
যেমন করোনার টিকাকরণ নিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অভিযোগ করেছেন, বাংলায় সবচেয়ে ধীর গতিতে করোনার টিকাকরণ হচ্ছে। অন্যান্য রাজ্যের থেকে অনেকটাই পিছিয়ে এ রাজ্য। কিন্তু তথ্য বলছে, বাংলায় এখনও পর্যন্ত দু’কোটি ১৭ লক্ষ লোককে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে ১ কোটি ৯৯ লক্ষ ভ্যাকসিন পাওয়া গিয়েছে। বাকি টিকার ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকার ৫৯ কোটি টাকা খরচ করে সরাসরি প্রস্তুতকারী সংস্থা থেকে ভ্যাকসিন কিনেছে।
এছাড়া, কেন্দ্রের রিপোর্টে প্রকাশিত ভ্যাকসিন নষ্ট হওয়ার তালিকায় সবচেয়ে ভালো ফল বাংলার। এ রাজ্যে সবচেয়ে কম ভ্যাকসিন নষ্ট হয়েছে। পাশাপাশি, বাংলায় ৪১ লক্ষ সুপার স্প্রেডারকে ইতিমধ্যেই টিকা দেওয়া হয়েছে। কোউইন পোর্টালের তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত একমাত্র দুটি রাজ্য ৩ কোটির বেশি টিকা দিয়েছে – মহারাষ্ট্র এবং উত্তরপ্রদেশ। তৃতীয় স্থানে বাংলা। এই দুই রাজ্যের জনসংখ্যা বাংলার চেয়ে অনেকটাই বেশি। সেই কারণে, বাংলা অন্য রাজ্যের তুলনায় অনেকটাই ভাল স্থানে আছে।
পাশাপাশি, মঙ্গলবারের হিসেব অনুযায়ী, সারা দেশে দৈনিক টিকা প্রদানের নিরিখে বাংলা তৃতীয় স্থানে। বাংলার ২.৭৮ কোটি টিকা প্রদান করেছে। বাংলার চেয়ে এগিয়ে শুধু মহারাষ্ট্র (৩.৮ কোটি) এবং অন্ধ্রপ্রদেশ (২.৮ কোটি)। এদিকে, সুপ্রিম কোর্টে জমা দেওয়া কেন্দ্রের হলফনামা অনুযায়ী, টিকা সরবরাহে কেন্দ্র প্রাধান্য দিয়েছে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিকেই। বাংলার ভাগ্যে জুটেছে নামমাত্র বরাদ্দ। আর সেই কারণেই ইচ্ছে এবং পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও দৈনিক ৩ মুখের বেশি টিকা প্রদান করতে পারছে না রাজ্য সরকার।