ভীম আর্মির সদস্য তিনি। তাই গত এপ্রিল মাসে তাঁর বাড়ির বাইরে আম্বেদকরের পোস্টার লাগিয়েছিলেন। কিন্তু স্থানীয় ওবিসি সম্প্রদায়ের কয়েকজন যুবক সেই পোস্টারটি ছিঁড়ে দেওয়ায় তাঁদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েছিলেন ২১ বছর বয়সী বিনোদ বামনিয়া। গত ৫ জুন ওই যুবকদের বেধড়ক মারের পর গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দু’দিন বাদে হাসপাতালেই মারা যান বিনোদ। দলিত বিনোদের মৃত্যুতে ইতিমধ্যেই চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে নানা মহলে।
রাজস্থানের হনুমানগড় জেলার কেকরালিয়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন বিনোদ। তাঁর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অনিল সিহাগ ও রাকেশ সিহাগ নামে দুই যুবকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে। ওই দুই যুবক সহ চারজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। অভিযোগ, তারা বিনোদের জাত তুলে গালি দিয়েছিল। বলেছিল, তোকে ভাল করে বুঝিয়ে দেব, আম্বেদকরের ভক্ত হওয়ার পরিণাম কী।
এদিকে, বিনোদের মৃত্যুর খবর পেয়ে ভীম আর্মি তাঁদের গ্রামে বিক্ষোভ দেখায়। অভিযোগ, ওই খুনের ঘটনায় পুলিশ নিষ্ক্রিয় রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, চলতি বছরে বিনোদ নিজে দু’বার তাদের কাছে অভিযোগ করেছিলেন। তাঁদের এলাকায় স্কুলে ছাত্রদের মাঝে হনুমান চালিশা বিলি করা হচ্ছিল। এর বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ করেন। পরে অভিযোগ করেন, স্থানীয় কিছু লোক তাঁকে হুমকি দিচ্ছে। কারণ তিনি রাস্তা অবরোধের বিরোধিতা করেছিলেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বিনোদের ভাইপো সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, গত ১৪ এপ্রিল আম্বেদকর জয়ন্তীর দিন তাঁদের বাড়ির বাইরে আম্বেদকরের ছবি দেওয়া পোস্টার লাগানো হয়েছিল। অনিল সিহাগ, রাকেশ সিহাগ ও আরও কয়েকজন গ্রামবাসী সেই পোস্টার ছিঁড়ে দেয়। বিনোদরা অনিলদের পরিবারের কাছে এসম্পর্কে অভিযোগ জানান। গ্রামের পঞ্চায়েত মধ্যস্থতা করে দু’পক্ষের মিটমাট করিয়ে দেয়। অনিল ও অন্যান্য অভিযুক্তের পরিবার ক্ষমা চেয়ে নেয়। কিন্তু অনিলরা হুমকি দিয়েছিল, তারা প্রতিশোধ নেবে।
৫ জুন বিনোদ ও মুকেশ রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। এমন সময় অনিল ও আরও কয়েকজন তাঁদের আক্রমণ করে। মুকেশ পালিয়ে যান। কিন্তু বিনোদকে হকি স্টিক দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। পরে তাঁকে শ্রীগঙ্গানগরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানেই তিনি মারা যান। পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা, অপরকে আঘাত করা, বেআইনি জমায়েত ও তফসিলী জাতি-উপজাতিদের ওপরে নির্যাতন প্রতিরোধী আইনে মামলা করেছে।