বিধানসভার ভোটপর্ব মিটতেই কোমর বেঁধে করোনা যুদ্ধ লড়তে নেমেছে কলকাতা পুরসভা। এই মুহূর্তে ‘ভ্যাকসিন অন হুইলস’, ‘ভ্যাকসিন ইন ড্রাইভিং’ থেকে শুরু করে ১৪৪টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও ১৬টি মেগা সেন্টারে টিকাকরণ কর্মসূচী চালিয়ে যাচ্ছে তারা। এবার যাতে ফোনে ডাকলেও বাড়ি-বাড়ি গিয়ে কোভিডের টিকা দিতে পারেন পুরকর্মীরা, সেই উদ্দেশ্যে ‘ভ্যাকসিন অন কল’ নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করে দিল পুরসভা। এদিকে দুয়ারে ভ্যাকসিন কর্মসূচী চালু হল নিউটাউনেও।
পুরসভার মুখ্যপ্রশাসক তথা রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম সোমবার জানিয়েছেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার চাহিদা মেনে রাজ্যকে ভ্যাকসিন দিচ্ছে না। তাই তো দৈনিক ৫০ হাজারের পরিকাঠামো তৈরি করেও মানুষকে টিকা দিতে পারছি না। যদি পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন পেয়ে যাই তবে ভবিষ্যতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিকা দেবেন পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা।’ পাশাপাশি, প্রধানমন্ত্রীর বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার ঘোষণা নিয়ে তাঁর কটাক্ষ, ‘ভাষণে তো উনি অনেক কিছু বলেন, সেগুলি কার্যকর হয় না। কবে পাঠাবেন, কীভাবে দেবেন কিছু বলেননি। কেন্দ্র পাঠাচ্ছে না বলে তো বিভিন্ন গোষ্ঠী ও স্তর ভাগ করতে হচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, ৬০ উর্দ্ধ প্রবীন থেকে সুপার স্প্রেডার, মহানগরের নানা পর্যায়ের নাগরিকদের টিকাকরণের কর্মসূচী চালিয়ে যাচ্ছে পুরসভা। ইতিমধ্যে প্রায় ২১ লক্ষ মানুষকে টিকা সম্পূর্ণ করেছে। কিন্তু তাও পুরসভার তথ্য বলছে, এখনও বেশ কিছু ৬০ উর্দ্ধ প্রবীণ মানুষ এবং বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিরা পুরসভার ভ্যাকসিন সেন্টারে এসে টিকা নেননি। বস্তুত সেই সমস্ত প্রবীণ এবং বিশেষভাবে সক্ষমদের কথা মাথায় রেখে পুরসভা বাড়ি গিয়ে টিকাকরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
পুরসভার হেলথ সেন্টার ছাড়াও বিশেষ অ্যাম্বুল্যান্সে মোবাইল ইউনিটের মাধ্যমে গত বছর থেকেই আবাসন, বাজার ও ক্লাবে গিয়ে করোনা পরীক্ষা চালু করেছে পুরসভা। আগামিদিনে ওই মোবাইল ইউনিটকে কাজে লাগিয়ে প্রবীণদের ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে পুরসভা। ফিরহাদ জানিয়েছেন, ‘টাকা দিয়েও পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন কিনতে পাচ্ছি না। যেহেতু কম পাচ্ছি তাই সেন্টারে আসা সুপার স্প্রেডারদের আগে দেব, পরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে।’
অন্যদিকে, কলকাতা পুরসভার পাশাপাশি নিউটাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এনকেডিএ) সোমবার ওই উপনগরীর হকারদের জন্য দুয়ারে ভ্যাকসিনের সুবিধা চালু করেছে। এই কাজে ব্যবহার করা হবে ইলেকট্রিক বাস। সেটি নিউটাউনের দুটি বাজার এলাকায় ঘুরে এই টিকাকরণের ব্যবস্থাপনা করবে। এনকেডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল, এডি ব্লকের বাজারের ব্যবসায়ীদের টিকা দেওয়া হয়েছে। এরপরে ডিএলএফ চত্বরের খাবারের স্টলগুলিতে এবং অন্যান্য হকারদের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়।