উত্তরবঙ্গে এসে গিয়েছে বর্ষা, চলতি সপ্তাহের মধ্যেই তা ঢুকে পড়বে দক্ষিণবঙ্গে। প্রবল গরমে কষ্ট পেলেও বাংলার বহু অংশে এখন চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারী বৃষ্টিপাত। দিন কয়েক আগেই ওড়িশার পাশাপাশি বাংলাতেও ছোবল মেরে গিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। আর তাতেই বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা। বহু মানুষ এখনও ঘরছাড়া, জলের তলায় এখনও বহু এলাকা। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে পুরোদমে বর্ষা ঢুকে গেলে পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। তাই আগাম প্রস্তুতি শুরু করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার নবান্নে দুপুর তিনটেয় বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা গিয়েছে, প্রাক বর্ষার প্রস্তুতি নিয়েই ওই বৈঠক ডেকেছেন মমতা। সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রীরা, সব জেলার জেলাশাসকরা উপস্থিত থাকবেন এই বৈঠকে। শুধু তাই নয়, ওই বৈঠকে যশ পরবর্তী ত্রাণ বিলিবণ্টন নিয়েও কথা হতে পারে।
ইতিমধ্যেই দলীয় বৈঠকে ত্রাণ নিয়ে নেতাদের সতর্ক করে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। জানিয়ে দিয়েছেন, প্রশাসনের ত্রাণ বিলির বিষয়ে সম্পূর্ণ দায়িত্ব প্রশাসনই নেবে। দলের তরফে এখানে কোনও ভূমিকা থাকবে না। এদিন বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনিক কর্তাদেরও সতর্ক করে দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, যশের কারণে ৫টি জেলায় মধ্যে মোট ২৯৩টি জায়গা ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই তালিকায় যেমন রয়েছে গ্রামীণ এলাকার সেতু, তেমনই রয়েছে সুন্দরবন-সহ ও দিঘা থেকে শঙ্করপুর এলাকার বিস্তীর্ণ ১২ কিলোমিটার সমুদ্র ও নদী বাঁধ। আর সেই কারণেই সেচ দফতরের উপর বেজায় চটেছেন মুখ্যমন্ত্রী। দিঘার বাঁধ ভাঙার নিয়ে রীতিমতো তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বলাবাহুল্য, তাঁর শাসনকালের শেষ কয়েক বছর সেচ দফতরের দায়িত্ব ছিল রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারীর উপর। তাঁরা দুজনেই এখন বিজেপিতে। ইতিমধ্যেই সেচ দফতরে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা হাতানোর অভিযোগে রাখাল বেরা নামে শুভেন্দু অধিকারীর এক ঘনিষ্ঠকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সেই ঘটনায় নাম উঠে আসছে শুভেন্দুরও।
এই পরিস্থিতিতে এদিনের বৈঠকে ফের সেচ নিয়ে রুদ্রমূর্তি ধারন করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। বিশেষজ্ঞদের অনেকেই বলছেন, রাজ্যের বহু এলাকায় এমন পরিস্থিতি যে ভারী বৃষ্টিতে উপচে নদীর জল ঢুকে পড়তে পারে গ্রাম-গঞ্জে। তাই আগাম প্রস্তুতি নিতেই হবে। সেই প্রস্তুতি নিতেই সোমবার বৈঠকে বসছেন মুখ্যমন্ত্রী।