প্রয়োজনের তুলনায় কর্মী বেশি। তাঁদের পদগুলি না থাকলেও কাজে কোনও প্রভাব পড়বে না। এমনই সাফাই দিয়ে এই ‘অতিরিক্ত’ পদগুলি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতীয় রেল। দেশের ১৬টি জোনে ১২,০০০-এর বেশি পদ কমানোর নির্দেশ দিয়েছে রেল বোর্ড।
রেলের এই সিদ্ধান্তের কারণ ব্যাখ্যা করেছেন রেলকর্তাদের একাংশ। তাঁদের মতে, রেল মনে করছে প্রায় সব বিভাগেই প্রয়োজনের তুলনায় অফিসার-স্টাফের সংখ্যা বেশি। সেই পদগুলি কমাতেই বিভিন্ন জোনগুলিকে ইতিমধ্যেই লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছে রেল। পদগুলি কমানোর পর রেলের কত টাকা সাশ্রয় হচ্ছে, তা হিসাব করারও নির্দেশ দিয়েছে রেল বোর্ড। তারপরেই নতুন করে প্রয়োজনীয় পদ সৃষ্টি করা হবে।
রেলের অফিসারদের একাংশ বলছেন, এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এতে কারও কাজ হারানোর আশঙ্কা নেই। পুরনো পদগুলির বদলে নতুন পদ পুনর্গঠন করা হবে।
রেলকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে রেলে বেড়েছে প্রযুক্তির ব্যবহার। স্বয়ংক্রিয় বিভিন্ন যন্ত্র একাই বহু মানুষের কাজ স্বল্প সময়ে করে ফেলছে। বেড়েছে কম্পিউটারের ব্যবহার। ফলে, বেশিরভাগ ডিপার্টমেন্টেই কর্মী উদ্বৃত্ত।
কর্মী ইউনিয়নগুলি রেলের যুক্তি মানতে নারাজ। তাঁদের বক্তব্য, করোনা পরিস্থিতিতেও প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন রেলকর্মীরা। দেশে প্রায় ১ লক্ষ রেলকর্মী করোনা আক্রান্ত। মৃত্যু হয়েছে ২ হাজারেরও বেশি রেলকর্মীর।
তাঁদের অভিযোগ, রেলের পক্ষ থেকে নেই দ্রুত টিকাকরণের উদ্যোগও। মাত্র ৩০% রেলকর্মী টিকা পেয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে পদ হ্রাসের এই সিদ্ধান্ত কর্মীদের মধ্যে দুশ্চিন্তা তৈরি করবে বলে মত কর্মী সংগঠনগুলির।
ইস্টার্ন রেলওয়ে মেনস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষ বলেন, ‘গত বছর সেফটি ক্যাটেগরিতে পদ কমানোর নির্দেশ এসেছিল। যেভাবে লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে পদ কমাতে বলা হয়েছে, তাতে অন্য উদ্দেশ্যের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। কর্মী সংকোচন করে নিজেদের দায় ঝেড়ে ফেলাই কর্তৃপক্ষের আসল উদ্দেশ্য।’ এই নিয়ে ভবিষ্যতে আন্দোলন হতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে রেলকর্মীদের সংগঠনগুলি।