একটা সাংবাদিক বৈঠকেই বুঝিয়ে দিলেন, যে দায়িত্ব তিনি পেয়েছেন, তা পালন করতে ‘শেষ পর্যন্ত’ ছুটবেন তিনি। হ্যাঁ, সোমবার বাইপাসের ধারের তৃণমূল ভবনে কার্যত ঝোড়ো সাংবাদিক বৈঠক করলেন তৃণমূলের নতুন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। একাধারে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ, অন্যদিকে ভিন রাজ্যে তৃণমূলকে ছড়িয়ে দেওয়ার দৃঢ় সংকল্প, অভিষেক এদিন বুঝিয়ে দিলেন, তাঁর লক্ষ্য অনেক দূর। আর একইসঙ্গে রাজ্য বিজেপিতে আতঙ্ক ধরিয়ে তিনি বললেন, ‘যাঁরা হেরেছেন তাঁরাই শুধু নন, বিজেপির হয়ে জিতে বিধায়ক হয়েছেন, এমন অনেকে দলে আসতে চাইছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সিদ্ধান্ত ওয়ার্কিং কমিটির হাতে ছেড়েছেন। পরবর্তী মিটিংয়ে এই নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’
আর দলবদলুরা? রাজনৈতির মহল বলছে, বিজেপি বিধায়কদের দলে নিলে তৃণমূল নেতাদের ফেলে রাখবেন না অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটের ফলপ্রকাশের দিনই দলবদলুদের স্বাগত জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারপর থেকে তৃণমূলে ফিরতে কার্যত লাইন পড়ে গিয়েছে দলত্যাগীদের। অভিষেকের এদিনের বার্তা তাঁদেরকেও স্বস্তি দিতে পারে।
তবে, তিনি যে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক, তা এদিন বারবার বুঝিয়ে দিয়েছেন অভিষেক। দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন, ‘আগের তৃণমূলের সঙ্গে এই তৃণমূলকে গুলিয়ে ফেললে হবে না। এক মাসের মধ্যে কংক্রিট প্ল্যান জানাব। যদি কোনও রাজ্যে ভোট লড়তে যাই তবে, একটি দুটি আসনের জন্য লড়তে যাব না। ভোটের ভাগ বাড়াতেও যাব না। আগের তৃণমূলের থেকে এই তৃণমূল আলাদা। এবার যদি ভিন রাজ্যে যাই, সেই রাজ্যে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হওয়ার লক্ষ্য নিয়েই যাব।’
অভিষেককে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক করার পর থেকেই ফের তৃণমূলের বিরুদ্ধে ‘পরিবারতন্ত্রের’ অভিযোগ করেছে বিজেপি। এদিন সেই প্রসঙ্গে সরাসরি দিল্লির নেতাদের নিশানা করেছেন কালীঘাটের বাসিন্দা। তিনি বলেন, ‘একদিকে বিজেপি বলে বাংলার বাইরে তৃণমূলের অস্তিত্ব নেই। আমি নতুন দায়িত্ব পেতেই তারা রীতিমতো বিপর্যস্ত।আমি অমিত মালব্যকে অনুরোধ করবো দিল্লির উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে যেতে। তারা একটা বিল আনুক যেখানে বলা হবে প্রত্যেক পরিবার থেকে একজন প্রতিনিধি রাজনীতিতে আসতে পারবে বা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জড়িত থাকতে পারবে। আমি বারবার বলেছি প্রকাশ্যে। কিন্তু ওদের ক্ষমতা নেই।’