পরিবারতন্ত্র, ‘পিসির ভাইপো’ – এ ধরনের অরাজনৈতিক আক্রমণে বিদ্ধ তিনি। আর রাজনৈতিক পথেই তার সপাট জবাব দেওয়া। এই পথেই চলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাতেই তিনি পৌঁছে গিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের পদে। নতুন এবং গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথম সাংবাদিক সম্মেলন অভিষেক বুঝিয়ে দিলেন নিজের স্থির লক্ষ্য। বললেন, ‘যে দায়িত্ব পেয়েছি, তাতে আগামী দিনে দলের আরও বিস্তারে কাজ করব।দলকে সর্বোচ্চ স্তরে নিয়ে যাব। লিখে রাখুন, আগামী কুড়ি বছর রাজ্য প্রশাসনের কোনও পদ আমি নেব না।” জবাব দিলেন পরিবারতন্ত্র নিয়ে কটাক্ষেরও।
সম্পর্কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো বলেই তাঁর এত সুযোগ-সুবিধা, দলে এত গুরুত্ব – অভিষেকের বিরুদ্ধে বিরোধীদের এসব অস্ত্রের বহুল প্রয়োগে তা কার্যত ভোঁতা হয়ে গিয়েছে। নতুন পদে বসার পরও তাঁকে পরিবারতন্ত্র নিয়ে খোঁচা শুনতে হয়েছে। সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে বসে এর জবাব দিলেন অভিষেক। নাম না করে এই নিয়ে সোজা তিনি আঙুল তুললেন অমিত শাহ এবং তাঁর ছেয়ে জয় শাহর দিকে। তাঁর কথায়, ‘আমি তো আগেই বলেছি, এক পরিবার এক প্রতিনিধির পক্ষে সংসদে বিল আনুক কেন্দ্র। আমিই প্রথম যে নিজের পদ ছাড়বে। সেটা তো হচ্ছে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ছেলে তো বিসিসিআইয়ের মাথায় বসে। তাহলে কীভাবে তাঁরা আমার বিরুদ্ধে আঙুল তোলেন’?
একুশের বিধানসভা ভোটের আগে যখন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা বারবার অভিষেককে ‘ভাইপো’ খোঁচায় বিদ্ধ করছিলেন, সেসময় তাঁর হয়ে মুখ খুলে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়েছিলেন তরুণ অভিষেকের রাজনীতির ময়দানে পা রাখার বৃত্তান্ত। দলে মনোনীত কোনও পদ নয়, অভিষেক নিজেই চেয়েছিলেন, সংসদীয় রাজনীতি অর্থাৎ ভোটে লড়াই করে তিনি রাজনীতির গভীরে ডুব দিতে চান। তাই তাঁকে লোকসভা ভোটে লড়াইয়ের জন্য এগিয়ে দেন মমতা। আজ অভিষেক ডায়মন্ড হারবারের দু বারের সাংসদ। ফলে দিল্লীটা খানিক চেনাশোনা হয়েছে। এবার তিনি দলেও সর্বভারতীয় স্তরে এলেন। অর্থাৎ অভিষেকের লক্ষ্য সে অর্থে ভারত বিজয়, রাজ্যের তৃণমূল সরকারের কোনও পদে থাকা নয়। তরুণের স্বপ্ন এখন দেশব্যাপী তৃণমূলের বিস্তার।