একুশের বিধানসভা ভোটের আগে ২২ হাজার কোটি টাকার কলকাতা উন্নয়ন তহবিল গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। নির্বাচনী ভরাডুবির পর সেই তহবিল বিশ বাঁও জলে। তার সাথে মহানগরীতে বিজেপির সংগঠনের হতশ্রী দশাটাও রীতিমতো প্রকট হয়ে পড়েছে। ভোটের ফলপ্রকাশের পর থেকেই কলকাতার বুকে গেরুয়াশিবিরের ২৫টির বেশি অফিস কার্যত তালা বন্ধ হয়ে পড়ে আছে।
উল্লেখ্য, সাংগঠনিকভাবে মহানগরীকে দু’টি জেলায় ভাগ করেছে বিজেপি। কলকাতা উত্তর ও কলকাতা দক্ষিণ। সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র এবং ২২টি মণ্ডল (২-৩টি ওয়ার্ড) নিয়ে গঠিত কলকাতা উত্তর সাংগঠনিক জেলা। কলকাতা দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলায় রয়েছে ১০টি বিধানসভা আসন এবং ৩৪টি মণ্ডল। এই ১৭টি বিধানসভা কেন্দ্রের একটিতেও জিততে পারেনি পদ্মশিবির। তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত দক্ষিণ কলকাতায় দায়িত্বে ছিলেন বিজেপির জাতীয় স্তরের সবচেয়ে প্রভাবশালী সংগঠক সুনীল বনসল। উত্তরপ্রদেশে দলের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) পদে থাকা এই নেতার প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন স্বয়ং অমিত শাহ। তাঁর দাবি ছিল, যোগী-রাজ্যের প্রায় দেড় লাখ বুথ বনসলের হাতের তালুর মতো চেনা। তাই তাঁকে আনা হয়েছিল কলকাতা দক্ষিণে। অন্যদিকে, উত্তর কলকাতায় দায়িত্বে ছিলেন কেন্দ্রীয় জলশক্তিমন্ত্রী গজেন্দ্র শেখাওয়াত। দুই হেভিওয়েট সংগঠকই ভোটে চূড়ান্ত ব্যর্থ। উল্টে সংগঠনের হাল এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, বর্তমানে পার্টি অফিস খোলার লোকও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
এপ্রসঙ্গে দক্ষিণ কলকাতা সাংগঠনিক জেলা পার্টির সঙ্গে যুক্ত এক রাজ্য নেতা বলেন, জেলায় একাধিক গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে সমস্যা তৈরি হয়েছে। অনেকেই জেলা সভাপতিকে মেনে নিতে পারছেন না। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, দক্ষিণ কলকাতা জেলার বৈঠক করতে হচ্ছে রাজ্য বিজেপি সদর দপ্তরে গিয়ে। সেই বৈঠকেও তীব্র বাকবিতণ্ডা, এমনকী হাতাহাতি পর্যন্ত হয়েছে। একইভাবে উত্তর কলকাতার বিজেপি নেতা নারায়ণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ফল প্রকাশের পর থেকে জেলা সভাপতির টিকিও দেখা যাচ্ছে না। পার্টি অফিস খোলার লোক নেই। অথচ ভোটের আগে ভিন দল থেকে এসে এরাই পছন্দমতো আসনে টিকিট নিয়ে গিয়েছে। এখন দুর্দিনে কর্মীদের পাশে কেউ নেই।”