গত ৩০ জানুয়ারি রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, রথীন চক্রবর্তী, বৈশালী ডালমিয়াদের সঙ্গে বিশেষ চার্টার্ড বিমানে দিল্লী উড়ে গিয়েছিলেন তিনিও। সেখানে অমিত শাহের বাসভবনে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। কিন্তু সে যাত্রা বোধহয় খুব একটা সুখকর হল না। ভোটে হারতেই বদলে গেল রাজনীতির রসায়নটাও। এবার ফের পুরনো দলের প্রতি আবেগের সুর উত্তরপাড়ার প্রাক্তন বিধায়ক প্রবীর ঘোষালের গলায়।
ভোটে হেরে আপাতত ‘রাজনীতি বিমুখ’ তিনি। তবে সম্প্রতি মা প্রয়াত হওয়ার পর বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে কোনও রকম খোঁজ খবর না নেওয়ায় কিছুটা খারাপই লেগেছে প্রবীরের। উল্টে মন ছুঁয়েছে রাজনীতির ময়দানে প্রতিপক্ষ হলেও স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিকের সৌজন্য। খোঁজ নিয়েছেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কিন্তু রাজ্য বিজেপির তরফে কেউ সমবেদনাটুকু জানাননি।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি প্রবীর ঘোষালের মাতৃবিয়োগ হয়েছে। তারপরই সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক ও উত্তরপাড়ার স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব তাঁর খোঁজ নেন। বাড়িতেও গিয়েছেন পুরনো সতীর্থরা। এমনকী মুখ্যমন্ত্রীও সমবেদনা জানিয়েছেন। সেখানে বিজেপির স্থানীয় কয়েকজন নেতৃত্ব ছাড়া আর কেউ খোঁজটুকু নেননি প্রবীর ঘোষালের। তাতেই আঁতে ঘা লেগেছে বর্ষীয়ান এই বিজেপি নেতার।
শুক্রবার দিলীপ ঘোষ জেলায় সাংগঠনিক বৈঠক করতে এসেছিলেন। কিন্তু সেখানে দেখা যায়নি প্রবীর ঘোষালকে। সম্প্রতি মুকুল রায়ের স্ত্রীকে হাসপাতালে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখতে যাওয়ার প্রসঙ্গ তুলে প্রবীর ঘোষাল বলেন, ‘অভিষেক যাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী ফোন করলেন, দিলীপ ঘোষ গেলেন। অথচ তার অনেক আগেই মুখ্যমন্ত্রী খোঁজ নিয়েছেন।’ প্রবীরের এই মমতা ও অভিষেক-বন্দনাতেই ইঙ্গিত মিলেছে যে ফের তৃণমূলের দিকেই ঝু্ঁকছেন তিনি।
উল্লেখ্য, বিধানসভা ভোটের আগে যে ছবি দেখা গিয়েছিল রাজ্যজুড়ে, ভোটের পর্ব মিটতে ঠিক তার উলট পুরাণ। সেসময় কেউ বলেছিলেন, দলে থেকে কাজ করা যাচ্ছে না। কেউ বলেছিলেন, দলে দম বন্ধ হয়ে আসছে। আর তারপরই ঘাসফুল শিবির ছেড়ে পদ্ম শিবিরে ভিড়েছিলেন দলবদলু নেতারা। তবে ভোটে বিজেপির ভরাডুবির পরই ঘর ওয়াপসির হিড়িক শুরু হয়ে গিয়েছে। এ তালিকায় সোনালী গুহ, অমল আচার্য, দীপেন্দু বিশ্বাস, সরলা মুর্মু, শুভ্রাংশু রায়ের পর এবার উত্তরপাড়ার প্রাক্তন বিধায়ক প্রবীর ঘোষালের নামও।