কলকাতা হাইকোর্টের উচ্চতর বেঞ্চে ক্রমেই দীর্ঘায়িত হচ্ছে নারদ মামলার শুনানি। তবে বুধবার এই মামলায় বাঙালি-অবাঙালি তরজা উঠে আসায় শুনানি অন্য কার্যত অন্য আঙ্গিকে পৌঁছে গেল। যখন শুনানি চলাকালীন অভিযুক্তের একাংশের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তুলে দিলেন, ‘কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা কি বাংলা বিরোধী?’ কল্যাণের অভিযোগ, আদালতে বারংবার কেন্দ্রের যুক্তি বস্তুত সে দিকেই ইঙ্গিত করছে। যেভাবে গত কয়েকদিন যাবতনানা ঘটনার কথা উল্লেখ করে বারবার কেন্দ্রের তরফে রাজ্যকে নিশানায় নেওয়া হয়েছে, সেই কথা মাথায় রেখেই কার্যত এই মন্তব্য করেন কল্যাণ।
নারদ মামলাটি অন্য কোথাও স্থানান্তরিত করা হবে কি না এই বিষয়টি নিয়েই আপাতত শুনানি চলছে আদালতে। বিষয়টি নিয়ে শুনানি চলাকালীন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে উল্লেখ করতে শোনা যায়, ‘সলিসিটর জেনারেল বাংলা বিরোধী।’ যার পালটা দিয়ে এ দিন তুষার মেহতা বলেন, ‘এটা ইচ্ছাকৃত মন্তব্য। নেতাজি, পরমহংসদেবের বাংলাকে আমরা সম্মান করি। এই মন্তব্যের বিরোধিতা করছি। আমি শুধু তথ্যের উপর করে বলছি সে দিন নিজাম প্যালেসের সামনে কী হয়েছিল’। যা শুনে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘কেউ কোনও ব্যক্তিগত আক্রমণ করবেন না। আদালত এ সব আলোচনার জায়গা নয়’। অন্যদিকে সলিসিটর জেনারেলকে কটাক্ষ করে কল্যাণকে বলতে শোনা যায়, ‘মামলার বাইরেও আমরা অনেক কিছু আলোচনা করি। তার মানে এটা নয় যে তা বিষয়টি উল্লেখ করতে হবে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক’।
মামলাটির শুনানি চলাকালীন অবশ্য কেন্দ্রের তরফে দাবি করা হয়, ৪ অভিযুক্ত জামিন পাবেন কি পাবেন না সেটা নিয়ে তারা চিন্তিত নয়। কিন্তু বিচারব্যবস্থাকে বিকৃত করার প্রচেষ্টা করা হচ্ছে। সাংবিধানিক কোর্ট সে দিন ঘটে যাওয়া গুণ্ডামির বিচার করবে কি না সেই প্রশ্নও ছুড়ে দেওয়া হয় বিচারপতিদের সামনে। পালটা বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনকে বলতে শোনা যায়, ‘সে দিন আপনারা ভাল করে (জামিনের) বিরোধিতা করতে পারেননি। এখন আবার বিচারকের নিরপেক্ষতা নিয়ে কথা বলছেন’! তুষার মেহতার পালটা বক্তব্য, ‘আমরা কেস ডায়রি পাইনি তাই ভালভাবে বিরোধিতা করতে পারিনি’। মামলাটির শুনানি আগামীকালও জারি থাকবে বলে জানা গিয়েছে।