শহর কলকাতার থেকে অনেক দূরে আসানসোলের এক অখ্যাত গ্রাম বালিজুড়ি। যার নাম খবরেও আসে না কখনও। কিন্তু গত এক মাস ধরেই নিউজ চ্যানেল খুললে এই গ্রামে বেড়ে ওঠা দুই ভাইকে নিয়ে খবরে ছয়লাপ। প্রথমে সাংবাদিক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের অকালপ্রয়াণ, আর তারপর তাঁরই অগ্রজ আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে কেন্দ্র রাজ্যের দড়ি টানাটানি— টিভির পর্দা ছেড়ে কার্যত নড়েইনি বালিজুড়ির বাসিন্দারা। অঞ্জনের মৃত্যুতে যেমন মুষড়ে পড়েছিল গোটা গ্রাম, তেমনি আলাপনবাবুর ক্ষেত্রে গ্রামের লোক চাইছিলেন, রাজ্যেই থাকুন তিনি। সোমবার যে আশাপূরণ হয়েছে তাঁদের।
প্রসঙ্গত, আসানসোলের বালিজুড়িতেই জন্ম দুই ভাই অঞ্জন-আলাপনের। পরে বালিজুড়ি ছেড়ে কোলিয়ারির কোয়ার্টার, সেখান থেকে কলকাতা। কিন্তু কখনও বালিজুড়ির কথা ভোলেননি। এই কিছুদিন আগেও অনুজকে নিয়ে আলাপনের স্মৃতিচারণেও উঠে এসেছিল গ্রামের কথা। অন্যদিকে, বালিজুড়িও তাঁদের মন থেকে সরায়নি। গ্রামের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, উনি আমাদের গর্ব। করোনা, যশ— কোনও পরিস্থিতিতেই উনি হাল ছাড়েননি। সততার সঙ্গে কাজ করে গিয়েছেন। গ্রামের আরেক বাসিন্দা উদয় মুখোপাধ্যায় বলেন, আমরা আর কিছু চাই না, চাই দাদা এই রাজ্যেই থাকুক।
আবার, তাঁর এক আত্মীয় প্রশান্ত মুখোপাধ্যায়ের কথায়, আমরা মনে করি ও একজন সৎ আমলা। আমরা মনে করি ওকে ওঁর কাজটা করতে দেওয়া উচিত। সর্বক্ষণ ছুটে বেড়ায় ও। তবে এখানেই শেষ নয়। গোটা গ্রামের মানুষই সোমবার গোটা দিনটা কাটিয়েছে টিভির সামনে। চেয়েছেন রাজ্য না ছাড়ুক প্রিয়জন। শেষমেশ পূরণ হয়েছে তাঁদের সেই আশা। কারণ আপোস না করে আলাপন আমলাজীবনের ইতি টেনেছেন। এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ছায়াসঙ্গীকে অবসর নিলেও দূরে যেতে দেননি। নাটকীয় ভাবে সোমবারই মুখ্য উপদেষ্টার পদে তাঁকে আসীন করেছেন। আর এতেই হাসি ফুটেছে বালিজুড়ির মুখে।