দেশে আছড়ে পড়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। আর তার জেরে রোজই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। লম্বা হচ্ছে মৃত্যুমিছিল। যাতে সামিল রেলকর্মীরাও। এবার করোনায় মৃত রেলকর্মীদের পোষ্যদের এক মাসের মধ্যে চাকরি দেওয়ার দাবি তুলল রেলের কর্মী সংগঠন।
রেলের আইনে বলা হয়েছে, কর্তব্যরত অবস্থায় কোনও কর্মীর মৃত্যু হলে এক মাসের মধ্যে তাঁর পোষ্যকে চাকরিতে নিয়োগ করতে হয়। এজন্য কোনও পরীক্ষা, এনকোয়ারিতে সময় নষ্ট করা হয় না। পেপার ভেরিফিকেশন করেই এক মাসের মধ্যে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়। এবার করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃতদের ‘কোভিড যোদ্ধা’র তকমা দিয়ে তাদের পোষ্যকে চাকরি দেওয়ার দাবি তুলল অল ইন্ডিয়া রেলওয়ে মেনস ফেডারেশন। সংগঠন রেল বোর্ডের চেয়ারম্যানকে লিখিতভাবে দাবিপত্র পেশ করেছে।
একই দাবিতে পূর্ব রেলের মেনস ইউনিয়নও জিএমের কাছে দাবিপত্র দিয়ে জানিয়েছে, কোভিডে আক্রান্ত হয়ে রেলের আড়াই হাজারেরও বেশি কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন। মহামারীতে মৃতের পরিবারের একজনকে যে চাকরি দেওয়া হবে, তা অবিলম্বে দিতে হবে। কর্তব্যরত অবস্থায় মৃত্যু হলে যে পদ্ধতিতে পেপার ভেরিফিকেশন করে যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি দেওয়া হয়, সেই একই পদ্ধতি অবলম্বন করে এক মাসের মধ্যে মৃতের পরিবারকে চাকরি দেওয়া হোক। এজন্য লিখিত পরীক্ষা, ইন্সপেকশন করে সময় নষ্ট না করে পরিবারগুলোকে বাঁচান হোক।
পূর্ব রেলের মেনস ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষ বলেন, মৃত রেলকর্মীরা করোনা কালে কাজ করতে গিয়েই আক্রান্ত হয়েছেন। লকডাউনে অত্যাবশকীয় সামগ্রী নিয়ে যাওয়ার জন্য পণ্যবাহী ট্রেন চলেছে। শ্রমিক ট্রেন চলেছে। আনলক পর্বে ট্রেন চলেছে। এই ট্রেন চালাতে গিয়ে রেলকর্মীদের ফ্রন্ট লাইনে কাজ করতে হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন বহু কর্মী। যাঁদের মধ্যে অনেকেই মারা গিয়েছেন। মহামারীর মধ্যে কাজ করতে গিয়ে এরা প্রাণ দিয়েছে। তাই এদের পরিবারকে সাহায্য করা রেলের কর্তব্য। তড়িঘড়ি চাকরি দেওয়া হোক পোষ্যদের।
এদিকে, হাওড়া ডিভিশনের টিকিট পরীক্ষরা জানিয়েছেন, তাঁরা যাত্রীদের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ রক্ষা করে চলেছেন। তাঁদের অধিকাংশের ভ্যাকসিন নেওয়া থাকলেও তাদের সন্তানরা টিকা পাচ্ছেন না। ফলে পরিবারের সদস্যদের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, কমবয়সী যেসব রেলকর্মী রয়েছেন আগে তাঁদের দেওয়া হবে। কারণ এখন ভ্যাকসিনের জোগান কম। ফলে কর্মীদের প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।
হাওড়ার ডিআরএম সুমিত নারুলাও কোভিড আক্রান্ত। ফলে কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক বাড়তির দিকে। শিয়ালদহের ডিআরএম এসপি সিং বলেন, শনিবার ডিভিশনে মাত্র তিন জন আক্রান্ত হয়েছেন। এদিকে রেলের হাসপাতালগুলি থেকে বহিরাগতদের টিকা দেওয়া বন্ধ করল রেল। আগেই বি আর সিং হাসপাতাল ভ্যাকসিন দেওয়া বন্ধ করেছিল। এবার জেলার মধ্যে রেল হাসপাতালগুলি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।