আজ, সপ্তাহের প্রথম দিনেই রাজ্যের মন্ত্রীদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হল। এদের মধ্যে পূর্ণমন্ত্রী হলেন ২৪ জন। এছাড়া স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী ১০ জন এবং প্রতিমন্ত্রী ৯ জন। এদিকে, মমতার এবারের মন্ত্রিসভায় পুরনোদের পাশাপাশি জায়গা করে নিয়েছে একাধিক নতুন মুখও। পূর্ব মেদিনীপুর থেকে আনা হয়েছে অখিল গিরিকে। মন্ত্রিসভায় জায়গা দেওয়া হয়েছে প্রথমবার তৃণমূলের প্রার্থী তথা প্রাক্তন আইপিএস হুমায়ুন কবীরকেও। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এবার লড়াই ছিল চ্যালেঞ্জের। আর সেই লড়াইতে যারা রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন, তাঁদেরকেই জায়গা দিয়েছে দল।
একনজরে দেখা যাক সেই তালিকার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি নাম :
বঙ্কিম হাজরা: দক্ষিণবঙ্গের সাগরের দু’বারের বিধায়ক তথা তৃণমূল কংগ্রেসের সাগর বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী বঙ্কিম হাজরা। এবারে মন্ত্রী তালিকায় নতুন তিনি।
রথীন ঘোষ: তিনি মধ্যমগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের দীর্ঘদিনের বিধায়ক। রাজনৈতিকভাবে তাঁর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। বিজেপির সেলিব্রিটি প্রার্থী রাজশ্রী রাজবংশীকে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন তিনি। লড়াই ছিল আইএসএফের সঙ্গেও। এই আসনে ছিল বিরাট সংখ্যক মুসলিম ভোটার। তবে শেষ অবধি তিনিই বাজিমাত করেছেন।
পুলক রায়: উলুবেড়িয়া দক্ষিণের প্রার্থী। গত বিধানসভা নির্বাচনেও জয়ী হয়েছিলেন তিনি। বিজেপির তারকা মুখ পাপিয়া অধিকারীর সঙ্গে এবারের লড়াইতে জয়ী হয়েছেন তিনি। রাজীবের দলবদলের পরও যে ভাবে তিনি তৃণমূলের ভোট সেখানে ধরে রেখেছেন, তার জন্যই এই পুরষ্কার বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
বিপ্লব মিত্র: হরিরামপুরের তৃণমূল প্রার্থী বিপ্লব মিত্র। ২০১১ নির্বাচনে জেতার পর গত বিধানসভায় জোটের সিপিএম প্রার্থী রফিকুল ইসলামের কাছে হেরেছিলেন বিপ্লব। তবে এবার ২৩ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন বিপ্লব মিত্র।
হুমায়ুন কবীর: ভোটের আগেই তৃণমূলে যোগ দেন চন্দননগরের প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর। মেদিনীপুরের ডেবরা কেন্দ্রে আর এক প্রাক্তন আইপিএস ভারতী ঘোষের সঙ্গে ছিল তাঁর ভোটযুদ্ধের লড়াই। কালনায় মুখ্যমন্ত্রীর জনসভায় শাসকদলে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেন তিনি। মার্চ মাসে অবসর গ্রহণের কথা ছিল হুমায়ুন কবীরের। তবে জানুয়ানির শেষ সপ্তাহেই তিনি ইস্তফা দেন।
অখিল গিরি: অধিকারীদের গড়ের গুরুত্বপূর্ণ নেতা। পূর্ব মেদিনীপুরের দখল রাখাই তাঁর মূল লক্ষ্য। বরাবর পূর্ব মেদিনীপুরের অধিকারী পরিবারের বিরুদ্ধ গোষ্ঠী হিসেবেই পরিচিত ৪ বারের বিধায়ক অখিল এই প্রথমবার রাজ্যের মন্ত্রিত্ব পাচ্ছেন। পূর্ব মেদিনীপুরে তৃণমূলের মাটি ধরে রাখার জন্যই সম্ভবত তাঁকে মন্ত্রীত্ব উপহার দিলেন মমতা।
রত্না দে নাগ: পাণ্ডুয়ার বিধায়ক। প্রায় বিশ বছর আগে প্রথম বার বিধানসভায় জিতেছিলেন শ্রীরামপুরের ডাকসাইটে সংগঠক, কংগ্রেসের কেষ্ট মুখোপাধ্যায়কে হারিয়ে। ২০০৯ সালে প্রথম বার লোকসভায় যান। পেশায় তিনি চিকিৎসক। সাংসদ তকমার থেকেও চিকিৎসক হিসেবেই তিনি বেশি পরিচিত এলাকায়। আবার এখনও তাঁর পরিচয় শ্রীরামপুরের প্রবাদপ্রতিম কংগ্রেস নেতা গোপালদাস নাগের মেয়ে হিসেবেই।
বীরবাহা হাঁসদা: সাঁওতালি সিনেমার তারকা তথা তৃণমূল প্রার্থী। ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে ঝাড়খণ্ড পার্টি থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন বীরবাহা। ভোটের আগে যোগ দেন তৃণমূলে।
জ্যোৎস্না মাণ্ডি: জেলার একমাত্র প্রার্থী যিনি দ্বিতীয়বারের জন্য বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। বাঁকুড়ার তরুণ মুখ জ্যোৎস্না মাণ্ডির সম্পত্তি নিয়ে বিতর্কের মুখেও পড়তে হয়। সব ঝড় সামলে ফের জয়ী হন তিনি।
মনোজ তিওয়ারি: বাংলা ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক। মনে করা হচ্ছে, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্লার জায়গা নিতে পারেন তিনি। রাজ্য ক্রীড়া দফতরে বিশেষ দায়িত্ব পাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।