রাজ্যে বিপুল আসন নিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজে সামান্য ভোটে হেরেছেন বটে, কিন্তু গোটা রাজ্যে তৃণমূলকে জিতিয়েছেন ২১৩ আসনে। ভোটের শতকরা হারেও বিরাট জয় পেয়েছে তৃণমূল। কিন্তু ফল পরবর্তী বাংলায় রাজনৈতিক অশান্তির আগুন জ্বলছে নানা জায়গায়। প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে। আর তা নিয়েই কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত চরমে উঠেছে মুখ্যমন্ত্রী পদে মমতা তৃতীয় বার শপথ নিতে না নিতেই। রাজ্যপালকে নরেন্দ্র মোদীর ফোন, রাজ্য ও রাজ্যপালের কাছে রিপোর্ট তলব, সর্বোপরি হঠাৎই কেন্দ্রীয় দলের রাজ্যে আগমন সেই সংঘাতকে সপ্তমে নিয়ে গিয়েছে। আর সেই সূত্রেই বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘শপথের কয়েক ঘণ্টা পরেই বাংলায় এসেছে কেন্দ্রীয় দল। যখন অক্সিজেন, ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে না তখন তাঁরা আসছেন না কেন? দিল্লীর অশান্তির পর কেন কেন্দ্রীয় দল পাঠানো হয় না?’ এরপরই ভোট মিটে যাওয়ার পরও রাজ্যে ঘাঁটি গেড়ে থাকা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের দিকেও তোপ দাগেন মমতা। প্রশ্ন তোলেন, ‘কেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা এখনও বাংলায়?’ সেইসঙ্গেই মমতার হুঁশিয়ারি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর যেন অকারণ প্ররোচনা না দেন।
রাজ্যের হিংসার ঘটনা প্রসঙ্গেও মমতা এদিন অভিযোগের আঙুল তুলেছেন শুধু বিজেপির দিকেই। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘কোচবিহারেই সবথেকে বেশি হিংসা হচ্ছে। আমাদের উদয়ন গুহর হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছে। সমস্ত কিছু আমরা খতিয়ে দেখছি। বিজেপি আসলে মানুষের রায় মেনে নিতে পারছে না। তাই ওরা গন্ডগোল করছে। আমি ওদের বলব, মানুষের রায় মেনে নিন।’
প্রসঙ্গত, বাংলায় ভোট পরবর্তী অশান্তি নিয়ে কেন্দ্রের ‘অতি সক্রিয়তা’ নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে তদন্ত করতে চার সদস্যের একটি দল গড়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বৃহস্পতিবার সেই দলের সদস্যরা কলকাতায় আসেন। নবান্নে প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেন তাঁরা। অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের অফিসার ওই দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বিধানসভা ভোটের ফল বেরোনোর পর রাজ্যের যেসব প্রান্ত থেকে গন্ডগোলের খবর আসছে, সেই এলাকা তাঁরা ঘুরেও দেখবেন বলে জানা গিয়েছে।