বেড ও অক্সিজেন- বর্তমান কোভিড পরিস্থিতিতে এই দুইয়ের অভাবে ক্রমশ নাজেহাল হচ্ছেন রোগীর পরিজন। এই পরিস্থিতি এড়াতে সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে শয্যার সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তুতি শুরু করেছে রাজ্য সরকার। এ বার বেসরকারি হাসপাতালগুলির এক-একটিতে মোট শয্যার অন্তত ৬০ শতাংশ কোভিড রোগীদের জন্য রাখার সুপারিশ করল রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশন। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, শয্যা-ব্যবস্থাপনায় সমন্বিত ব্যবস্থাপনা তৈরির চেষ্টা চলছে। এরই সঙ্গে অক্সিজেনের জোগান স্বাভাবিক রাখতে এবং মৃতদেহ সৎকারও নির্বিঘ্নে ব্যবস্থা করতে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট মহলের খবর, গত বছর কোভিডের সর্বোচ্চ পর্যায়ে সরকারি পরিকাঠামোয় যে সংখ্যক শয্যা ছিল, তার থেকে ২০ শতাংশ এবং বেসরকারি ক্ষেত্রে অন্তত ২৫ শতাংশ শয্যা বাড়ানোর পথে হাঁটছে রাজ্য। স্বাস্থ্য কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী প্রতিটি বেসরকারি হাসপাতালে মোট শয্যার অন্তত ৬০ শতাংশ কোভিড চিকিৎসায় সংরক্ষিত রাখা গেলে আরও সুবিধা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এর সঙ্গে, ভেন্টিলেটর যুক্ত কোভিড শয্যা আরও বাড়ানোর লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে বলে খবর।
এক স্বাস্থ্য-কর্তার কথায়, “শুধু কোভিডই নয়, অন্য গুরুতর রোগের চিকিৎসা করতেও যাতে সমস্যা না হয়, তা-ও নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” পূর্ব ভারতে বেসরকারি হাসপাতাল সংগঠনের সভাপতি রূপক বড়ুয়া বলেন, ‘‘প্রতিটি হাসপাতালই যতটা সম্ভব শয্যা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। তবে পরিকাঠামোগত কিছু বিষয় রয়েছে। একটা হাসপাতালের মধ্যে কোভিড এবং নন-কোভিড আলাদা করে, সকলের হয়তো ৬০ শতাংশ শয্যা না-ও হতে পারে। কিন্তু প্রত্যেকেরই শয্যা বাড়ানোর সদিচ্ছা রয়েছে। যাতে সমস্ত করোনা রোগী চিকিৎসা পান।’’
কিন্তু সাধারণ মানুষের মধ্যে শয্যা পাওয়া নিয়ে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে, তা দূর করতে সরকারের দাবি, কেউ যাতে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত না হন, তা নিশ্চিত করতে সবরকম চেষ্টা চালানো হচ্ছে। স্বাস্থ্য-কর্তাদের বক্তব্য, সরকারি টেলিমেডিসিন পরিকাঠামোয় শতাধিক ফোন-লাইন রয়েছে।
সেখানে হাজার হাজার মানুষ ফোন করছেন। সেই কারণে হয়তো একবারে ফোন পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ, সেখানে চিকিৎসকেরা অডিয়ো-ভিস্যুয়ালে রোগীদের পরামর্শ দিচ্ছেন। দরকারে সরকারি হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থাও হচ্ছে।
স্বাস্থ্য ভবনের দাবি, সেফ হোমের শয্যা বৃদ্ধিতেও জোর দেওয়া হয়েছে সরকারের তরফে। যাঁদের অবস্থা গুরুতর নয়, সেখানে তাঁদের রেখে চিকিৎসা হবে। এক-একটি হাসপাতালের অধীনে এমন একাধিক সেফ হোম রয়েছে। আবার বেসরকারি হাসপাতালের ক্ষেত্রেও স্যাটেলাইট স্বাস্থ্য পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে। তাতে হাসপাতালগুলির সঙ্গে বিভিন্ন হোটেল যুক্ত করা হয়েছে। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তাদের বক্তব্য, এ পর্যন্ত এমন ১৫টি স্যাটেলাইট পরিকাঠামোয় ২০১৯টি শয্যা আছে। আরও কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালের অধীনে চার-পাঁচশো শয্যা তৈরি হয়েছে।