মারণ করোনা ভাইরাসের সেকেন্ড ওয়েভে আক্রান্ত প্রায় গোটা দেশ। এই দুঃসময়ে আক্রান্তদের চিকিৎসার স্বার্থে কেন্দ্রের মোদী সরকার আগাম প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে এই সঙ্কট মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের পাশে থাকার বার্তা দিল বাংলার বিরোধী দল সংযুক্ত মোর্চা। গত শনিবার নবান্নে গিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় সহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে দেখা করে মোর্চার নেতৃত্ব এমনই আশ্বাস দিয়েছে। বাংলায় করোনার দ্বিতীয় দফার ঢেউ আছড়ে পড়ার পর কোনও রাজনৈতিক দল বা মঞ্চ হিসেবে বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ নিয়ে গঠিত এই মোর্চাই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারের সঙ্গে মুখোমুখি দরবার করল। বিধানসভার নির্বাচন চলার মধ্যে এই বৈঠক যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
গতকাল মোর্চার তরফে বিমান বসু, প্রদীপ ভট্টাচার্য, সিমল সোরেন, মনোজ ভট্টাচার্য, প্রবীর দেব প্রমুখ নেতৃবৃন্দ নবান্নে যান। সেখানে পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী তাঁদের সঙ্গে আধ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন আলাপনবাবুরা। একদিকে রোগীদের শুশ্রূষায় প্রয়োজনীয় ওষুধ, অক্সিজেন, হাসপাতালের শয্যার অভাব, অন্যদিকে প্রতিষেধক টিকার অপ্রতুলতার প্রসঙ্গই মূলত উঠে আসে এদিনের আলোচনায়। লিখিত স্মারকলিপির পাশাপাশি মৌখিকভাবেও
বিমানবাবুরা এব্যাপারে কেন্দ্র সরকারের আগাম প্রস্তুতির ক্ষেত্রে চরম গাফিলতির কথা তুলে ধরেন। একইসঙ্গে বর্তমানে নবান্ন যেভাবে যুদ্ধকালীন তৎপরতা দেখিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে তারও তারিফ করেন মোর্চার নেতারা। এদিকে, অক্সিজেন, ওষুধ ও টিকা নিয়ে কেন্দ্রের মোদী সরকারকে চাপ দেওয়ার জন্য রাজ্যের মুখ্যসচিব বিশেষভাবে অনুরোধ জানান কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপবাবুকে। প্রদীপবাবু প্রত্যুত্তরে সেই দায়িত্ব পালনের প্রতিশ্রুতিও দেন বাংলার স্বার্থে।
বৈঠকের পর নবান্ন চত্বরে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বিমানবাবু-প্রদীপবাবুরা বলেন, এই আলোচনা খুবই ইতিবাচক হয়েছে। এটা ঠিক, আগাম সতর্কবার্তা থাকা সত্ত্বেও কেন্দ্র প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি না নিয়ে যথেষ্ট গাফিলতি করেছে। তবে বর্তমানে রাজ্য সরকার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করছে বলে জানিয়েছে। আমরা গত বছরও মানুষের স্বার্থে সাধ্যমতো সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলাম। এবারেও তার ত্রুটি থাকবে না।