গোটা দেশজুড়ে করোনার সেকেন্ড ওয়েভের জেরে সংক্রমণ লাগামছাড়া হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর হারও। আর মৃতদের মধ্যে বেশিরভাগই যে তেমন কোনও চিকিৎসা পাচ্ছেন না, সেই ছবিও পরিষ্কার। এই অবস্থায় পরিস্থিতি সামাল দেওয়া না ধামাচাপা, কোনটা বেশি যুক্তিযুক্ত? মধ্যপ্রদেশ সরকারের আচরণে সেই প্রশ্নই আরও একবার উঠে গেল।
বিপুল পরিমাণ করোনা রোগীর মৃত্যু ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে মধ্যপ্রদেশের বিজেপি সরকার, এদিন এমনই এক গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। মূলত শ্মশান ও কবরস্থানের পরিসংখ্যানের সঙ্গে সরকারি পরিসংখ্যানের অসংগতিই এই অভিযোগের মূল কারণ। জানা গেছে, রাজধানী ভোপালের কেবলমাত্র একটি শ্মশানেই নথিভুক্ত হয়েছে ৯৪ জন মৃতের নাম। অথচ সরকারি হিসেব অনুযায়ী সে রাজ্যে মারা গেছেন মাত্র ৩ জন।
করোনার জেরে প্রায় প্রতিদিনই মধ্যপ্রদেশের বিভিন্ন শ্মশান কিংবা কবরস্থান গুলিতে দেখা যাচ্ছে ভয়ানক মৃত্যু মিছিল। কিন্তু সরকারি পরিসংখ্যানে তার সিকি ভাগও উঠে আসছে না। আর প্রশ্নটা দানা বাঁধছে সেখানেই। কেন মৃতের সংখ্যা গোপন করছে সরকার? এ পর্যন্ত মধ্যপ্রদেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৪ লক্ষ ৩৩ হাজার ৭০৪ জন। শুধুমাত্র মঙ্গলবারেই আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১২ হাজার ৭২৭ জন। ভাইরাসে সে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত প্রাণ কেড়েছে মোট ৪ হাজার ৭১৩ জনের।
সেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলার শ্মশান আর কবরস্থান থেকেও উঠে আসছে করোনা নিয়ে উদ্বেগ আতঙ্কের ছবি। শেষকৃত্য সম্পন্ন করার জায়গাটুকুও পাচ্ছেন না অনেকেই। ঠাঁই মিলছে না কবরে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শ্মশানের বাইরে মৃতদেহ নিয়ে লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা। এই পরিস্থিতিতে সরকারের তরফে যে প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাচ্ছে তাও মোটেই সন্তোষজনক নয়।
বিজেপি শাসিত সেই রাজ্যের এক মন্ত্রী দিন কয়েক আগেই সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের মুখে বলেছিলেন, “আপনারা বলছেন প্রতিদিন এত মানুষ মারা যাচ্ছে। আমি মানছি। কিন্তু করোনায় মৃত্যু কেউ ঠেকাতে পারবে না। মানুষ তো বুড়ো হয়, মারা যায়।” বরং এক্ষেত্রে মানুষের উচিত করোনাবিধি মেনে সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করা, এমনটাই দাবি করেছিলেন মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী। যা নিয়ে দেশজুড়ে প্রবল বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল।