ভারতে আছড়ে পড়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। আর তার জেরে প্রতিদিন ঝড়ের গতিতে বাড়ছে দেশের দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা। ইতিমধ্যেই সর্বকালের সব রেকর্ড ভেঙে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যায় নতুন নজির গড়েছে ভারত। একদিকে যেমন দেশে দিনে নতুন কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা আড়াই লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে, তেমনি দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা পেরিয়েছে দেড় হাজার। এমন পরিস্থিতিতে সোমবার থেকে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউকে কেন্দ্র করে ‘রিজাইনমোদী’ হ্যাশট্যাগটি ভাইরাল হয়। দেশের বিরোধী নেতারা এই হ্যাশট্যাগে টুইট করে নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করছেন। এছাড়াও সাধারণ মানুষও এই হ্যাশট্যাগে টুইট করে ভরিয়ে দেন। সন্ধ্যের মধ্যেই প্রায় ২.৩৮ লক্ষ টুইট হয় ওই হ্যাশট্যাগটিতে। কার্টুন, গ্রাফিক্সে ভরে যায় টুইটার। যখন শ্মশানে হাজার হাজার মৃতদেহ জ্বলছে তখন প্রধানমন্ত্রী বাংলায় জনসভা করছেন। এই বিষয়টি নিয়েই গোটা দেশে সমালোচিত হতে হয় মোদীকে।
কংগ্রেস, তৃণমূল, ডিএমকে-এর হেভিওয়েট নেতারাও মোদীকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। যেমন কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী পি সি সিদ্ধারামাইয়া লেখেন, ‘ভারতের এই কোভিড সংগ্রাম নরেন্দ্র মোদী সরকারের প্রতিচ্ছবি। প্রথমবারের জন্যে দেশকে পাহারা দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এখন কী অবস্থা। প্রধানমন্ত্রী দেশের চেয়েও নিজেকে বড় মনে করেন।’ কংগ্রেসের মুখপাত্র রশনি কুশল জয়সোয়াল তাঁর নিজের একটি ভিডিও পোস্ট করেন যেখানে তিনি বারাণসী তে গঙ্গাঘাটে চিতার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। সাথে এই অবস্থায় বাংলায় মোদীর জনসভা করার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে প্রশ্ন তোলেন। এ রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বোস আবার চিতার ছবি পোস্ট করে লেখেন, গতবছর প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন ২১ দিনেই করোনা সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এই ছবিটি এই বছরের এপ্রিলের। এক বছরের বেশি হয়ে গেল। এই ছবিটিই প্রধানমন্ত্রীর অকর্মণ্যতা প্রমাণ করে।
রাষ্ট্রীয় জনতা দলের নেতা তেজ প্রতাপ যাদব লেখেন, ‘রোম নগরী যখন জ্বলছিল, নিরো তখন বাঁশি বাজাচ্ছিলেন।’ ডিএমকে নেতা কানিমোঝি স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনকে প্রশ্ন করেছেন, ‘যখন গোটা বিশ্ব দ্বিতীয় ঢেউয়ের বিষয়ে সাবধান করেছিল তাহলে সরকার কুম্ভ মেলার অনুমতি দিল কেন?’ এছাড়াও ‘গো করোনা গো’, বাংলায় জনসভায় এসে প্রধানমন্ত্রীর বলা ‘এতো ভিড় এর আগে দেখিনি’ এইসব বিষয় নিয়ে দেশের মানুষ একের এক কটাক্ষ করে টুইট করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। কেউ জিজ্ঞেস করেছেন থালা বাটি বাজিয়ে, আলো জ্বালিয়ে কী লাভ হল?