জোরকদমে নির্বাচনী প্রচার কর্মসূচী চালিয়ে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলায় জেলায় পৌঁছে যাচ্ছেন তিনি। আজ উত্তরবঙ্গে প্রচার শেষ করে কলকাতার উপকণ্ঠেও মানুষের দরবারে পৌঁছে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী। কোচবিহার জেলার শীতলকুচিতে প্রথম জনসভা সারলেন তিনি। এরপর বিকেলে যাদবপুর এবং টালিগঞ্জেও সভা করলেন মমতা। যাদবপুরের সভা থেকে কড়া কথায় বিঁধলেন বিজেপিকে।
মমতা প্রশ্ন তোলেন, “কোথা থেকে এল এই টাকা? পিএম কেয়ার, বীমা, রেল, সেল, ভেল, বিএসএনএল, এমটিএনএল, আইপিসিএল, এয়ার ইন্ডিয়া বেচার টাকা কোথায় গেল? লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা চুরি করেছে। অমর্ত্য সেনকে তাড়িয়ে দিল। শান্তিনিকেতন এক্সপ্রেসের নাম বদলে দিল। নেতাজির নামে কলকাতা পোর্টের নামও বদলে দিয়েছে। নরেন্দ্র মোদী নিজের নামে স্টেডিয়াম করছে। এরা অশিক্ষিত।”
পাশাপাশি বলেন, “আমি শ্রমিকদের নিয়ে এসেছি রেল ভাড়া দিয়ে। কেউ কোন অসুবিধেয় পড়লে সাহায্য করি। এটাই তো আমার কাজ। লক্ষ লক্ষ লোকের ঠিকানা করে দিয়েছি। ইকো পার্ককে আমি প্ল্যান করে করেছি। মিলেনিয়াম পার্কের সংস্কার করেছি। আরও করব। আমি কলকাতাকে গ্রীন অ্যান্ড ক্লিন করব। জলের ট্যাক্স উঠিয়ে দিয়েছি। গঙ্গাসাগরের ট্যাক্স উঠিয়ে দিয়ে। বাংলায় ১২ টা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল, আমি ৪৫ টা করেছি। হাসপাতালগুলোকে সুপার স্পেশ্যালিটি করে দিয়েছি। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে সব কিছু আমি প্ল্যান করেছি। ট্রমা কেয়ার সেন্টার, যেসব বাচ্চারা মায়ের দুধ পায়না তাদের জন্যেও আমরা বিশেষ চিকিৎসার ব্যবস্থাও করেছি। কর্ড ব্লাড ব্যাঙ্ক করেছি। বিজেপির হিংসা হচ্ছে।” জনগণের উদ্দেশে বলেন, “আমার দেওয়া বিনে পয়সায় চাল, ৯০০ টাকার গ্যাসে ফোটাবেন? বিজেপিকেই ফুটিয়ে দিন। ব্যাঙ্কের সুদ কমিয়ে দিয়েছে।”
এরপর গেরুয়াশিবিরকে একহাত নিয়ে মমতার বার্তা, “পুলিশদের বদলে দিয়েছে। আমি যদি বাঘের বাচ্চা হই, বাংলাকে তোমাদের দখল করতে দেব না। বাংলাকে গুজরাট হতে দেব না। নির্বাচন শুরু হতেই আমার পায়ে চোট করে দিয়েছে। আমাকে এভাবে থামানো যাবে না। আমি যতদিন বাঁচব লড়াই করে যাব। সিবিআই পাঠাচ্ছে। আমরা সবাই চোর? কারও থেকে একটা চা-ও খাইনা। এমপি পেনশন নিই না। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবেও মাইনে নিই না।”
মমতা জানান, “অবাঙালিরাও ওদের সহ্য করতে পারছে না। রাফাল কেলেঙ্কারির পর্দা ফাঁস হবে। দেশের মানুষেরা বিজেপিকে দেখে নেবে। ভোটের আগে একটু সাবধানে থাকুন। আসামে ১৪ লক্ষ বাঙালিকে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়েছে।করোনার সময় একবারও আসেনি। আমি সব জায়গায় ঘুরে ঘুরে মানুষের খবর নিয়েছি। এখন রোজ আসছে প্রচার করতে।” পাশাপাশি ক্ষোভ প্রকাশ করেন, “‘বাংলা’ নাম করার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিছুতেই ‘বাংলা’ নাম করল না।” দেশব্যাপী বেকারত্ব নিয়ে বিজেপিও জোর নিন্দা করেন তিনি। “আমরা ক্ষমতায় এলে উদ্বাস্তুদের বাকি সব কাজ তাড়াতাড়ি করে দেব। কলকাতাকে সার্কেল করে সাজিয়ে দেব। যানবাহনের কোনও অসুবিধা হবে না। প্রচুর কর্মসংস্থান হবে। বাংলায় ৪০ শতাংশ দারিদ্র কমেছে। বেকারত্ব কমেছে বাংলায়, যেখানে ভারতে বেকারত্ব সর্বাধিক।” জানান মুখ্যমন্ত্রী।