ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে শিল্পকেই হাতিয়ার করতে চেয়েছিলেন একদল শিল্পী। কিন্তু দেশবিরোধী এবং দলবিরোধী কুৎসার অভিযোগ তুলে সেই নাটক মাঝপথে বন্ধ করে দিলেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা। তাঁদের ‘রক্তচক্ষু’র সামনে অভিনেতা-অভিনেত্রীরা কার্যত পালিয়ে বাঁচলেন। ক্ষমতায় আসার আগেই বিজেপির এহেন আস্ফালনের অভিযোগ উঠল দক্ষিনবঙ্গের বাসন্তীতে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ থিয়েটার সেন্টারের ডাকে শনিবার বাসন্তীতে থিয়েটার সেন্টার লাগোয়া মাঠে নাটক করতে গিয়েছিল। ‘জনগণমন’ নামে একটি সংগঠন। নাটকের নাম- ‘ইঁদুরকল’। মঞ্চের আশপাশে সিএএ-এনআরসি, নয়া কৃষি আইন বিরোধী পোস্টার-ফ্লেক্স লাগানো হয়েছিল। অভিযোগ, বিকেলে নাটক শুরুর আগে বিজেপি নেতা এবং স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য অরবিন্দ হালদার ও এলাকার একটি ক্লাবের সদস্যরা সেখানে চড়াও হন। কেন ওই পোস্টার, ফ্লেক্স লাগানো হয়েছে, তার কৈফিয়ত চাওয়া হয়। সেগুলি ছিঁড়েও ফেলা হয়।
ওই পরিস্থিতিতেই শুরু হয় নাটক। অভিযোগ, নাটক কিছুটা গড়াতেই ফের ওই যুবকদের হুমকি শুরু হয়। নাটকের গানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে অপমান এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে কুৎসার অভিযোগ তুলে তাঁরা রীতিমত মারমুখী হয়ে ওঠে। নাট্যকর্মীদের প্রাণে মেরে ফেলার শাসানি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। ফলে, কিছুক্ষণের মধ্যেই ভয়ে নাটক বন্ধ করে দেন নাট্যকর্মীরা। দর্শকরাও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। হামলাকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নাট্যকর্মীরা স্থানীয় একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। নাটকের দলে কয়েকজন মহিলাও ছিলেন।
তাঁরা জানান, ভোরবেলা সেখান থেকে কার্যত লুকিয়ে পালিয়ে কলকাতা ফিরতে হয় তাঁদের। রবিবারেও তাঁদের একটি নাটক করার কথা ছিল। সেটি বাতিল করা হয়। রবিবার নাট্যকর্মী শুভঙ্কর দাশশর্মা বলেন, ‘‘এই ধরনের নাটক রাজ্যের কোথাও করা যাবে না বলে হুমকি দেওয়া হয় আমাদের। আতঙ্কে সারারাত জেগে কাটিয়েছি সবাই।’’ তাঁর সঙ্গী অমিত সাহা বলেন, ‘‘সবাই এতটাই ভয় পেয়েছিলেন যে,থানায় যাওয়ারও সাহস হয়নি।’’