নির্বাচনী প্রচারের উত্তপ্ত আবহে সরগরম বাংলা। জোরকদমে নেমে পড়ছেন প্রার্থী-সহ রাজনৈতিক কর্মীরা। ব্যতিক্রম নন অনুব্রত মণ্ডলও। প্রচারে ব্যস্ত তিনিও। এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষের সুরে হুঁশিয়ারি বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি। “তুমি যতই ভয় দেখাও বাংলার মানুষ কারও গোলামি করবে না। তুমি ভাবছ, আমরা কৃতদাস থাকব। কিন্তু, জেনে রেখো বাংলা কারও কৃতদাস হয়ে থাকবে না। তুমি একে একে সব বিক্রি করে দিচ্ছ। কিনল কে? আদানি ও আম্বানি। এবার ব্যাঙ্ক বিক্রি করার ফন্দি আঁটছো। কিন্তু, সাবধান। বাংলার মানুষ সব হিসেব বুঝে নেবে।” বুধবার পাত্রসায়রের কুশদ্বীপে ইন্দাসের তৃণমূল প্রার্থী রুনু মেটের সমর্থনে আয়োজিত সভায় প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে এমনটাই বললেন অনুব্রত।
পাশাপাশি মোদীকে তোপ দেগে তাঁর বক্তব্য, “আজ বিশ্ববাজারে তেলের দাম ২৮ টাকা। আর তুমি বিক্রি করছ ১০০ টাকায়। তুমি ভারতবর্ষকে শেষ করে দিলে। নীবব মোদী তোমার কে হয় ? তুমি বলেছিলে, ওদের ধরে আনব। কিন্তু, আজ পর্যন্ত তো পারলে না। তাই বাংলার মানুষ তোমাকে বিশ্বাস করবে না।” এদিন কুশদ্বীপ ছাড়াও অনুব্রতবাবু এদিন দুপুরে রানিবাঁধের বিরসা বাজারে তৃণমূল প্রার্থী জ্যোৎস্না মাণ্ডির সমর্থনে সভা করেন। সেখানেও আগাগোড়া প্রধানমন্ত্রী মোদী ও বিজেপিকে কড়া সমালোচনায় বেঁধেন তিনি।
পাত্রসায়রে অনুব্রতবাবু প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, “তোমার লজ্জা লাগা দরকার। তোমাদের রাজ্যে মাসে ৩৬টা মেয়ে ধর্ষণ হয়। তুমি কী পদক্ষেপ নিতে পেরেছ? তুমি শুধু বড় বড় ভাষণ দিতে জানো। উন্নয়ন করতে শেখোনি। তুমি বলেছ, আম্ফানে টাকা দিয়েছি। তোমার লজ্জা নেই। তাই এসব বলছ। বাংলা থেকে ৭৫ হাজার কোটি টাকা তুমি নিয়ে যাও। তারপরেও বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উন্নয়নের জোয়ার বইয়ে দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, মমতা কোটিপতি ঘরের মেয়ে নয়। বাপের বাড়ি, মামার বাড়ি বীরভূমের গ্রামে। মাত্র আড়াই কাঠা জমির উপর তাঁর বাস। তুমি তাঁর সঙ্গে লড়াই করতে নেমেছ? মমতা কৃষকের কষ্ট বোঝে। গরিবের কষ্ট বোঝে। কিন্তু, তুমি মানুষকে ভালোবাসো না। শুধু নিজেকে ভালোবাসো। তোমার তো অনেকগুলো রাজ্য আছে। কেন কন্যাশ্রী, খাদ্যশ্রী, স্বাস্থ্যসাথী চালু করতে পারছ না? তুমি বলেছ, আমি বাংলায় ১ কোটি আয়ুষ্মান দেব। আর মমতা ১০ কোটি মানুষের জন্য ভেবেছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, বাংলার কেউ না খেয়ে থাকবে না। এতবড় লকডাউন গেল। তুমি মানুষের খবর নাওনি। মমতার হৃদয় কেঁদেছে। মমতা ফের ক্ষমতায় এলে মানুষকে পাঁচ বছরের জন্য ফ্রিতে রেশন দেবেন। স্বাস্থ্যসাথী সবার জন্য করেছেন।”
বুধবার রাজনৈতিক রাজনৈতিক ভাষণে তৃণমূলের ডাকসাইটে নেতা আরও বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সারাদিন চিন্তা করেন, আমার কৃষকটা কী করছে। আমার বেকার ছেলে মেয়েটা কী করছে। কিন্তু, তুমি মানুষের জন্য ভাবো না। তুমি আদানি আর আম্বানিদের কথা ভাবো।” পাশাপাশি অনুব্রত যোগ করেন, “তুমি বলেছ, এনআরসি করব। ৭০ বছরের আগের দলিল চাইছ। তাড়িয়ে দেবে? বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকলে তা পারবে না। আন্দোলন করব। তুমি মমতাকে চেন না। সিঙ্গুরে, নন্দীগ্রামে আন্দোলন দেখেছ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার মানুষের পাশে থাকবে। পাত্রসায়রের মানুষ তাঁর হয়ে রুনু মেটেকে ভোট দেবেন। সব শেষে অনুব্রতবাবু বলেন, এই মাটিতেই খেলা হবে। ভয়ঙ্কর খেলা হবে। চ্যালেঞ্জ করছি, খেলা হবে।”