দেশের গরীব মানুষদের রান্নাঘরে গ্যাস সিলিন্ডার পৌঁছে দেওয়ার সাফল্য নিয়ে ৫টি রাজ্যে আসন্ন ভোটের আগে প্রচারে ঝড় তুলেছে মোদী সরকার। অথচ কয়েকটি সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, একঝাঁক রাজ্যে বাস্তব ছবিটা একেবারেই উল্টো। দেশের মোট ৬টি বড় রাজ্যে চালানো এই সমীক্ষা বলছে, শহরাঞ্চলের বস্তি এলাকায় অর্ধেকের বেশি মানুষ এখনও রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার ব্যবহার করে না। তাঁদের ভরসা, বিকল্প জ্বালানি।
এমনকী বহু ঘরে রান্নার গ্যাসের সংযোগ ও সিলিন্ডার থাকা সত্ত্বেও সেই পরিবার তা ব্যবহার করছে না। কারণ একটাই, রান্নার গ্যাসের ক্রমশ মূল্যবৃদ্ধি। বিগত কয়েকমাস ধরে পেট্রোল, ডিজেল, রান্নার গ্যাসের দাম যেভাবে বেড়ে চলেছে, তার জেরে বন্ধ করে দিতে হয়েছে সিলিন্ডারের ব্যবহার। সমীক্ষায় উঠে এসেছে আরও কিছু পরিকাঠামোগত সমস্যার কথা। তার মধ্যে অন্যতম, হোম ডেলিভারি। দেখা যাচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রেই বাড়ির ঠিকানায় সিলিন্ডার পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা থমকে গিয়েছে। সবমিলিয়ে ক্রমশ অনুজ্জ্বল হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা।
কাউন্সিল অন এনার্জি, এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ওয়াটার এই সমীক্ষা করেছে। ভারতবাসীর জীবনযাপনের ধরন ও প্রক্রিয়া নিয়ে সমীক্ষা চালায় সংস্থাটি। তাদের ২০২০ সালের কুকিং এনার্জি অ্যাক্সেস সার্ভেতেই রান্নার গ্যাস নিয়ে তথ্যগুলি উঠে এসেছে। বিহার, ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ড, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশে সমীক্ষা চালানো হয়। এই ৬ রাজ্যের শহরাঞ্চলের বস্তি, কলোনি এবং নিম্নবিত্ত জনপদে সমীক্ষা চালিয়ে জানা গিয়েছে, এখনও ১৬ শতাংশ মানুষ শহরের মধ্যেই কাঠ, ঘুঁটে, কয়লা দিয়ে রান্নার কাজ করে।
এই ৬টি রাজ্যে সামগ্রিকভাবে যতগুলি বাড়িতে সমীক্ষা চালানো হয়েছে, তার অর্ধেকের বেশি পরিবারই রান্নার গ্যাস ব্যবহার করছে না। এবং এর প্ৰধান কারণ মূল্যবৃদ্ধি। সমীক্ষকরা লক্ষ্য করেছেন, এদের একটি বড় অংশই বাড়িতে সিলিন্ডার থাকা সত্ত্বেও সেটি রিফিল করে ব্যবহার করছে না। তারা সিলিন্ডার ফেলে রেখেছে বাড়িতে। কারণ, বেড়ে যাওয়া দাম মেটানোর সামর্থ্য তাঁদের নেই। দেখা গিয়েছে, শীতকালে ৪৫ শতাংশ পরিবার রান্নার গ্যাসকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করেছে। বাকি ৫৫ শতাংশই তা করেনি। যেই ঘটনায় মুখ পুড়েছে কেন্দ্রের মোদী সরকারের।