দিন কয়েক আগেই ঠাকুরনগরের জনসভায় গিয়ে মতুয়াদের নাগরিকত্ব নিয়ে বড়সড় আশ্বাস দিয়ে এসেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ঘোষণা করেছিলেন, করোনা পরিস্থিতি মিটলে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করবে কেন্দ্র। তার পাল্টা সভায় তৃণমূল যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করে দিলেন, নাগরিকত্বের জন্য মতুয়াদের কোনও প্রমাণ দেখাতে হবে না। তাঁরা সবাই নাগরিক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের স্বীকৃতি দিয়েছেন।
ঠাকুরনগরের সভায় অভিষেক বলেন, ‘ভোটের আগে নাগরিকত্ব নিয়ে ভাঁওতা দিচ্ছে বিজেপি। বলছে ক্ষমতায় এলে নাগরিকত্ব দেবে। ভ্যাকসিন দেওয়া শেষ হলে নাগরিকত্ব দেবে। ভারতবর্ষ কত কোটি মানুষের বাস? এই ১৩০ কোটি মানুষের ভ্যাকসিন দিতে কত বছর সময় লাগবে? ১৩০ কোটি মানুষের ভ্যাকসিন দিতে বছরের পর বছর কেটে যাবে।’ তৃণমূল যুব সভাপতি বোঝানোর চেষ্টা করলেন মতুয়াদের নাগরিকত্বের জন্য আলাদা করে কোনও প্রমাণপত্রের প্রয়োজন নেই। ঠাকুরনগরের সভায় সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করলেন, ‘আপনারা এদেশের নাগরিক কিনা, সেজন্য আপনাদের প্রমাণ দিতে হব?’ সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করে বললেন, ‘লোকসভার আগে অনেক কথা বলে আপনাদের ভোট নিয়েছে। আপনারাই এই মানুষগুলোকে ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নির্বাচিত করেছেন। আপনারা প্রত্যেকেই নাগরিক। আপনারা যদি অবৈধ হন, তাহলে নরেন্দ্র মোদিও অবৈধ।’ অভিষেকের সাফ কথা, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপনাদের সম্মান দিয়েছেন। আপনাদের স্বীকৃতি দিয়েছেন। আপনাদের জমির পাট্টা দিয়েছেন। আর কোনও স্বীকৃতির প্রয়োজন।’
সিএএ-র পাশাপাশি এনআরসি ইস্যুতেও বিজেপিকে বিঁধেছেন অভিষেক। মতুয়াদের বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, এনআরসি আসলে একটা ফাঁদ। আসামের উদাহরণ টেনে তৃণমূল যুব সভাপতি বলছেন, ‘এনআরসিতে ১৯ লক্ষ নাম বাদ গিয়েছে। এর মধ্যে ১২ লক্ষ হিন্দু বাঙালি। আগামী দিনে আপনাদের সঙ্গেও তাই হবে। এই ফাঁদে কি আপনারা পা দেবেন?’ এনআরসি-সিএএ’র পাশাপাশি বহিরাগত, ভুমিপুত্র ইস্যু নিয়েও গেরুয়া শিবিরকে বিঁধেছেন অভিষেক। বোঝাতে চেয়েছেন, বহিরাগতরা মতুয়া তথা নমঃশূদ্রদের পাশে থাকবে না। পাশে থাকবেন শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।