৪৮ ঘণ্টা আগে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে তাঁর স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। স্বাভাবিক ভাবেই ঠাকুরনগরের মাঠে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কী বলেন তা শুনতে আগ্রহী ছিলেন তৃণমূল কর্মীরা। মতুয়া-মঞ্চে পা রেখে অভিষেক স্বাভাবিক ভাবেই তোপ দাগলেন নাগরিকত্ব ইস্যুতেই। স্নায়ুর চাপের কোনও চিহ্ন আপাতভাবে ধরা পড়ল না অভিষেকের চোখেমুখে। বললেন, ‘সিবিআই-ইডি যাকে খুশি লাগিয়ে দিন, আপনার জেদের চেয়ে দ্বিগুণ জেদ আমার। গলা চেপে দিলেও জয় বাংলা, জয় হিন্দ স্লোগান তুলব। মেরুদণ্ড বিক্রি করব না।’
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা আজ রাজ্যে। স্বাভাবিক ভাবেই অভিষেকের মুখে এদিন শুরু থেকেই ছিল বহিরাগত তত্ত্ব। করোনার সময়ে মমতাবালা ঠাকুররাই ছিলেন মতুয়াদের পাশে, বহিরাগতরা থাকেনি। অভিষেকের বিস্ফোরক অভিযোগ, মতুয়াদের পাঠানো জল অযোধ্যায় নেওয়া হয়নি।
এ দিন অভিষেক সভা শুরুই করলেন গুরুচাঁদ হরিচাঁদের নামে জয়ধ্বনি তুলে। বলেন, ‘সভা নষ্ট করার চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু আমি তো এখানকার ভূমিপুত্র, বহিরাগত নই। মাঠে জল ঢেলে সভা নষ্ট করা যাবে না।’
ঠাকুরনগরে অভিষেকের সভার অন্য গুরুত্বও রয়েছে। মতুয়া ভোট এবারের বিধানসভা অন্যতম নির্ণায়ক ফ্যাক্টর। তাই এই ভোট পেতে চেষ্টার কসুর করছে না পদ্মশিবির। কিন্তু নাগরিকত্বের দিন তারিখ নিয়ে গড়িমসি নিয়ে মতুয়াদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে তা অস্বীকার করার উপায় নেই। এছাড়া সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বজিতের সংঘাত প্রকাশ্যে আসায় চিন্তার ভাঁজ পড়েছে বিজেপির কপালে। এই পরিস্থিতির পূর্ণ সদ্ব্যবহার চায় তৃণমূল। এই কারণেই আজ অভিষেকের সঙ্গে মঞ্চে উঠে প্রথমেই ব্রাত্য বসু কটাক্ষ করেন কেন্দ্রের নাগরিকত্বের টালবাহানার বিষয়টি তুলে। অভিষেক তোলেন সিএএ প্রসঙ্গ। বলেন, ‘আপনারা মুখিয়ে ছিলেন, কিন্তু একশো তিরিশ কোটি মানুষের ভ্যাকসিন পেতে দশ বছর লাগবে। তার মানে নাগরিকত্ব নিয়ে ভাঁওতা দিচ্ছে। আপনাদের ভোটার আইডি কার্ড, আধার কার্ড রয়েছে, বিজেপি আবার পরিচয়পত্র কী দেবে! ওরা তো নির্বাচিত হয়েছে আপনাদের এই নাগরিকত্বের জোরেই, ভোটের মাধ্যমে। আপনারা অবৈধ হলে ওরাও অবৈধ।’
এ দিন অভিষেক সোনার বাংলা স্লোগানটি নিয়ে কটাক্ষ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঢঙেই। তাঁর প্রশ্ন ছিল, ‘কেন সোনার উত্তরপ্রদেশ হল না?’ আয়ুষ্মান ভারত লাগু করার জন্য বিজেপির মরিয়া ভাব নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। শর্তাশর্ত তুলে ধরে বলেন, স্বাস্থ্যসাথী কেন আয়ুস্মান ভারতের চেয়ে ভালো।