প্রায় শিয়রে বিধানসভা নির্বাচন। সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। ৪৮ ঘন্টা আগে হুগলীর ডানলপে মোদীর জনসভার পরই পাল্টা জনসভা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘জয় শ্রী রাম’-এর স্লোগান ওঠা মঞ্চেই বুধবার উঠল ‘জয় বাংলা’ ধ্বনি। শুধু তাই নয়, ‘দিদি’র স্তুতিতে মমতাময় গোটা জনসভা। মাদল, ঢাকঢোল, খঞ্জনি বাজিয়ে আয়োজনের কমতি ছিল না।
প্রসঙ্গত, বাংলায় এসে মমতা প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্রমাগত সুর চড়িয়েছেন মোদী-শাহ-নাড্ডারা। কেন্দ্রীয় একাধিক প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বাংলা, সেই অভিযোগও তুলেছে পদ্ম শিবির। যদিও এক অঙ্গনবাড়ির কর্মী সমর্থন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতাকেই। তাঁর কথায়, “আমি দিদিকে একবার দেখব আর ওঁর কথা শুনব বলে এসেছি। রাজ্য সরকারের বিধবা ভাতা এবং পেনশন অনেক সুবিধা পাচ্ছি মমতা সরকারের আমলে।”
রাজনৈতিক মহলের মতে, দেশের প্রেক্ষাপটে কিংবা বাংলায় মোদীর জনপ্রিয়তা যথেষ্ট। কিন্তু বাংলার মেয়ে হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে রাজনীতির আইকন তা ফের বুঝিয়ে দিয়েছে হুগলির জনসভা। ৪৫ বছরের অঙ্গনবাড়ি কর্মী যাদবী দেবী বলেন, “দিদি সবার জন্য কাজ করেন। হিন্দু-মুসলিম আলাদা করে দেখেন না। এবার তাই দিদির হ্যাটট্রিক হবেই।”
উল্লেখ্য, যে সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামকে হাতিয়ার করে বাংলায় ফের পট পরিবর্তন করতে চাইছে বিজেপি, সেই সিঙ্গুরবাসী এখনও মজে মমতাতেই। সেখান থেকেই মমতার সভায় যোগ দিতে আসা ৭০ বছরের হরিবিলাস বাগ জানান যে, মমতার কৃষক বন্ধু প্রকল্পের মাধ্যমে তিনি ও তাঁর পরিবার অনেকটাই উপকৃত হয়েছেন। বুধবারে তৃণমূল সুপ্রিমোর জনসভায় যুবাদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মত। অনলাইন ক্লাসের জন্য মমতা প্রশাসনের থেকে পাওয়া ১০ হাজার টাকা দিয়ে ফোন কিনে তা দিদিকে দেখাতে এনেছেন অনেকেই।
এদিন হুগলীর সভায় জনস্রোত ও মানুষের মনে মমতার প্রতি মুগ্ধতা বিশ্লেষণ করে রাজনৈতিক মহলের মত, তৃণমূল সুপ্রিমোর আনা একাধিক প্রকল্পই কিন্তু মন কেড়েছে বঙ্গবাসীর। ৫ টাকার ডিম-ভাত থেকে সবুজ সাথী-কন্যাশ্রী কিংবা দিদিকে বলো, রাজ্যবাসীর মননে কিন্তু ছাপ ফেলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।