শেক্সপিয়ার বলেছিলেন, ‘নামে কী আসে যায়’। তবে নাম বদলের রাজনীতিই এখন অন্যতম মুখ্য কর্মসূচী হয়ে উঠেছে গেরুয়া শিবিরের। বিজেপি জমানায় দেশের একের পর এক স্টেশন, রাস্তা, অঞ্চলের নাম বদল হতে দেখা গিয়েছে। সেই ধারা বজায় রেখেই এবার নাম বদলে গেল মোতেরা স্টেডিয়ামের। ফিরোজ শাহ কোটলার নামবদলের পর আমেদাবাদের মোতেরা তথা সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল স্টেডিয়ামের নাম হল দেশের প্রধানমন্ত্রীর নামে। এখন থেকে এই স্টেডিয়াম নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়াম নামেই পরিচিত হবে। বছর খানেকের সংস্কারের পর আজ এই স্টেডিয়াম উদ্বোধনে উপস্থিত থেকে এই বার্তা দেন অমিত শাহ। কিন্তু ক্রিকেটারও নন, মৃত কিংবদন্তিও নন। তাও কেন জীবিত রাজনীতিবিদের নামে দেশের একটি স্টেডিয়াম হবে? এই নিয়ে এক যোগে সরব হয়েছে বিরোধীরা।
কংগ্রেসের মিডিয়া কোঅর্ডিনেটার রাধিকা খেরা এদিন ট্যুইটারে লেখেন, ‘সর্দার প্যাটেলের নাম সরে গেল এক ব্যক্তির নামে স্টেডিয়ামের নামাঙ্কণের স্বার্থে? আত্মপ্রেমী প্রচার-মন্ত্রীর মাস্টারস্ট্রোক এটা।’ তোপ দেগেছে তৃণমূলও।দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘এটা বিজেপির পক্ষেই সম্ভব। বাম জমানায় একজন বাম বিধায়ক নিজের মূর্তি বসিয়েছিলেন। ওটা সিকিভাগ। আর নরেন্দ্র মোদীর ডবল ইঞ্জিন সরকার তথা ডবল চুল্লি শ্মশান পরিচিত স্টেডিয়ামকে এভাবে নামকরণ করছে। পুরনো জিনিসকে ভুলিয়ে বিশ্রী জিনিস চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আগ্রাসী আধিপত্য এটা। নরেন্দ্র মোদী আর যাই হন, ক্রিকেটার নন।’
উল্লেখ্য, রাজনৈতিক নেতাদের নামে স্টেডিয়ামের নামকরণ দেশে নতুন নয়। গত বছরই ফিরোজ শাহ কোটলা স্টেডিয়ামের নাম বদলে অরুণ জেটলি স্টেডিয়াম করা হয়। দেশে জহরলাল নেহেরুর নামাঙ্কিত স্টেডিয়াম রয়েছে ৯টি। তার মধ্যে আটটিতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খেলাঘুলো হয়। রাজধানী দিল্লী, গুয়াহাটি, বিজয়ওয়াড়াতে স্টেডিয়াম রয়েছে ইন্দিরা গান্ধীর নামেও। দেরাদুন, হায়দ্রাবাদ, কোচিতে স্টেডিয়াম গড়া হয়েছে রাজীব গান্ধীর নামে। অটল বিহারী বাজপেয়ীর নামে নামাঙ্কিত নাদাউন ও লখনউ-এর দুটি স্টেডিয়াম। কিন্তু এই স্টেডিয়ামগুলির কোনওটার নামকরণই এই ব্যক্তিদের জীবদ্দশায় বা শাসনকালে করা হয়নি, বিরোধীর বক্তব্য এটাই।