প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়াই হোক বা বিতর্কিত মন্তব্যের ফোয়ারা ছোটানো— সবেতেই গেরুয়া শিবিরের জুড়ি মেলা ভার। বরাবরই বেঁফাস মন্তব্য করে বিতর্ক বাধিয়েছেন বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা। আর সেই তালিকায় সম্প্রতি যোগ হয়েছে বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের নাম। বুধবার পূর্ব বর্ধমানে পরিবর্তন যাত্রা থেকে মুখ খুলে ফের একবার বিতর্কের সৃষ্টি করেছেন যিনি। তৃণমূল নয়, এবার বাংলায় যদি কেউ রিগিং করে তাহলে সেটা হবে বিজেপি। এমনই বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন বিজেপি যুব মোর্চার সভাপতি।
যার ফলে বৃহস্পতিবার বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে পূর্ব বর্ধমান জেলার পুলিশ সুপার এবং জেলাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানাল রাজ্যের শাসকদল। পাশাপাশি, খণ্ডঘোষ থানা এবং সংশ্লিষ্ট ব্লকের বিডিও-র কাছেও এ বিষয়ে অভিযোগ জানানো হয়েছে তৃণমূলের পক্ষ থেকে।
প্রসঙ্গত, বুধবার বিকেলে বিজেপির পরিবর্তন যাত্রার রথ খণ্ডঘোষের সগড়াই এলাকায় পৌঁছায়। সেখানে বিজেপি জনসভায় করে। অভিযোগ, বিজেপি যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি সৌমিত্র সেই সভায় বক্তৃতা করতে গিয়ে বলেন, ‘বিধানসভা নির্বাচনে রিগিং করে জিতবে বিজেপি। আর সেই খেলা দেখবে তৃণমূল।’ এরপরই বৃহস্পতিবার সৌমিত্রর বিরুদ্ধে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের দফতরে লিখিত অভিযোগ জানান খণ্ডঘোষ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি অপার্থিব ইসলাম। তাঁর অভিযোগ, খণ্ডঘোষের জনসভায় বিজেপি-র দলের কর্মী-সমর্থকদের ভোট লুটের পরামর্শ দিয়েছেন সৌমিত্র। অপার্থিবর দাবি, সৌমিত্র বুধবার সভা মঞ্চ থেকে বলেন, ‘এবারের বিধানসভা ভোটে খণ্ডঘোষ বিধানসভায় তৃণমূল প্রার্থীকে ৩০ হাজারের বেশি ভোট পেতে দেব না। ভোটের সময়ে বিজেপির লোকজন রিগিং করবে, আর সেটাই তৃণমূলের লোকজনকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতে হবে।’
সৌমিত্র তাঁকে এবং খণ্ডঘোষের বিধায়ক নবীনচন্দ্র বাগকে উদ্দেশ্য করে হুমকিও দিয়েছেন বলেও অপার্থিব অভিযোগপত্রে জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, ‘এক জন সাংসদ হয়ে সৌমিত্র ভোট লুটের কথা জনসভা থেকে কী ভাবে বলতে পারলেই সেটাই আশ্চর্যের। রিগিং করে ভোটে জেতা কিংবা ভোট লুটের কথা ঘোষণা করা দু’টোই বেআইনি। এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে কার্যত নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ভন্ডুল করতে চেয়ে সাংসদ স্বয়ং বেআইনি কাজটি করেছেন।’ অপার্থিব জানান, সৌমিত্রের ঘোষণা বিষয়ে কেন্দ্রীয় কমিশনেও তিনি অভিযোগ জানাবেন। অন্যদিকে, খণ্ডঘোষের বিধায়ক নবীনচন্দ্র বাগ বলেন, ‘সৌমিত্রর ঘোষণা থেকেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে বিজেপি ভোট লুট করেই ত্রিপুরা, অসম-সহ বিভিন্ন রাজ্যগুলিতে ক্ষমতা দখল করেছে। একই ভাবে ভোট লুট করেই বিজেপি বাংলায় ক্ষমতা দখল করতে চাইছে।’’ নবীনচন্দ্র জানান , সৌমিত্রের হুমকির বিষয়টি তিনি তৃণমূলের সর্ব্বোচ্চ নেতৃত্বকে জানিয়েছেন। তারাও এই বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছেন।’