বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হল তৃণমূলের তরফে তফশীলি জাতি-উপজাতি সম্মেলন। সেখানে প্রধানবক্তা যথারীতি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বক্তৃতায় ঝড় তুললেন তিনি। তোপ দাগলেন বিজেপি ও নয়া দলত্যাগীদের। আবার আবেগপ্রবণ হয়ে বলে ফেললেন নিজের কম বয়সের লড়াইয়ের কথাও। পাশাপাশি কড়া জবাব দিলেন বিজেপির সমালোচনার।
সুরক্ষা নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপিশাসিত সরকারকে কড়া আক্রমণ করেন তিনি। বলেন, রাজ্য সরকার স্বাস্থ্য-শিক্ষা-খাদ্য দিচ্ছে। বিনামূল্যে। আর ভেদাভেদ করতে চাইছে বিজেপি। এরাজ্যে হাথরাস-উন্নাওয়ের মতো ঘটনা ঘটেনি, এও মনে করিয়ে দেন বিজেপি। পাশাপাশি বিজেপির নেতাদের মধ্যাহ্নভোজের রাজনীতিকে কটাক্ষ করে মমতার বলেন, “সকালবেলায় কলাপাতায় দোস্তি রাতে ফাইফস্টারে মস্তি।” ভোট সম্পর্কে আত্মবিশ্বাসী মমতা এদিন বললেন, “২৫০ র বেশি আসন নিয়ে এলে দিল্লীর চেয়ার ঠকঠক করে কাঁপবে। টিভিগুলি বিক্রি হয়ে গিয়েছে। আমায় চমকে ধমকে কিছু করানো যাবে না।”
কোভিড লকডাউন প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানান, কারও মাইনে বন্ধ হয়নি এই লকডাউনে। আশ্বাস দিয়ে এও বলেন যে, তাঁর সঙ্গে যারা থাকবেন, যারা ভোট দেবেন তাদের দিয়েই সরকার হয়ে যাবে। যান বিজেপিকে গিয়ে দেখে আসুন। এসব কথার মধ্যেই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন মমতা। নিজের লড়াইয়ের কথা তুলে ধরে বলেন, “আমাদের কেউ বই দিত না। লাইব্রেরি তে গিয়ে বই নিয়েছি, পড়েছি, পাশ করেছি। সংসার চালিয়েছি। রান্না করতাম। মাকে কাজ করতে দিতাম না।”
পাশাপাশি গেরুয়াশিবিরকে কটাক্ষ করে মমতা বলেন যে, বিজেপি দেশটাকে বিক্রি করে দিয়েছে। “আজ সৌগত রায় সিঙ্ঘু গিয়েছিলেন, ঢুকতে দেয়নি। আমার দুঃখ হয়, ত্রিপুরায় কয়েকজন কংগ্রেস গিয়ে বিজেপি কে শক্তিশালী করল। এখানে কেউ যাচ্ছে। কেউ টাকা রাখতে যাচ্ছে। কয়েকজন শিল্পীকে বলা হয়েছে আমাদের হয়ে বলো।” জানান তিনি। বিজেপির আদিবাসী এলাকায় আসনদখল নিয়েও মমতা জানান, “আদিবাসীদের কাছ থেকে সব সিট নিয়ে গিয়েছে বিজেপি। একটা কিছু করেনি। আমরা উদ্বাস্তু কলোনি করে দিয়েছি। কোভিডের সময় ট্যাব, সাইকেল দিয়েছি। বাজেট প্রসঙ্গে মমতার উবাচ- বাজেট কেন্দ্র বলছে ৬৫০ কিমি রাস্তা করবে। আমরা ৮৫০০ কিমি রাস্তা বানিয়েছি।”
এছাড়া দলত্যাগীদেরও প্রবল কটাক্ষ করেন মমতা। বলেন, “এখন চোরগুলোকে চার্টার্ড ফ্লাইটে দিল্লী নিয়ে যাচ্ছে বিজেপি। কিন্তু পরিযায়ী।শ্রমিকদের ট্রেন দিতে পারে না। যারা বাংলায় থেকে বাংলার সঙ্গে গদ্দারি করে তাদের মানুষ সম্মান করে না। সিরাজকে মানুষ সম্মান করে। মিরজাফরকে করে না।” সবমিলিয়ে আসন্ন নির্বাচনে জনগণকে তৃণমূলের উপরই আস্থা রাখার জন্য অনুরোধ করলেন মমতা। পাশাপাশি তাঁর মন্তব্য, রাজ্যের ভবিষ্যত সুদৃঢ় করতে তৃণমূলের বিকল্প আরও উন্নততর তৃণমূল। বাংলাবাসীকে এমনই বার্তা দিলেন মমতা।