কেন্দ্রীয় কৃষি আইন নিয়ে শেষপর্যন্ত সংসদে বিরোধীদের প্রশ্নের জবাব দেবে কেন্দ্র। বুধবার বিষয়টি রাজ্যসভায় তোলা হবে। জানালেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডু। বাজেট অধিবেশনের তৃতীয় দিন অর্থাৎ মঙ্গলবারই বিষয়টি নিয়ে আলোচনার দাবি জানিয়েছিল বিরোধী দলগুলি। কিন্তু তাদের প্রস্তাব খারিজ করে দেন নাইডু। জানিয়ে দেন, এ নিয়ে যা বলার তা বুধবার বলতে হবে। প্রবল হইচইয়ের জেরে বেশ কিছু ক্ষণ রাজ্যসভার অধিবেশন মুলতুবি করা হয়।
গত ২৬শে জানুয়ারি কৃষকদের ট্র্যাক্টর র্যালির পরে সিঙ্ঘু, টিকরি, গাজীপুর সীমান্তে সুরক্ষা বাড়াল দিল্লী পুলিশ। কৃষকদের বাধা দেওয়ার রাস্তায় পেরেক, উঁচু কংক্রিট রাখা রয়েছে। রয়েছে বোল্ডার, ব্যারিকেডও। সিঙ্ঘু সীমান্তে কৃষকদের তাঁবুর দুই কিলোমিটার আগে থেকেই ব্যারিকেড লাগিয়েছে পুলিশ। রাস্তা জুড়ে থরে থরে সাজানো কংক্রিটের ব্যারিকেড। ৩-৪ স্তরে কাঁটাতারের বেড়া। তার ঠিক পিছনেই আবার কংক্রিটের ব্যরিকেডের মাঝে ঢালাইয়ের কাজ চলছে। প্রতিটি ব্যারিকেডের ঠিক পরে রাস্তায় পুঁতে রাখা হয়েছে সার সার গজাল আর পেরেক। তিন-চার স্তরীয় ব্যারিকেডের পিছনে আড়াআড়ি ভাবে দাঁড় করানো পুলিশের গাড়ি, বাস। আর তার সঙ্গে সতর্কিত পুলিশের টহল।
এই ইস্যুতেই মোদী সরকারকে প্রবল কটাক্ষ করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। কংগ্রেস সংসদ রাহুল গান্ধী দিল্লীর সীমানায় পুলিশ যে প্রস্তুতি নিয়েছে তার ছবিগুলি শেয়ার করেছেন। পাশাপাশি তিনি লিখেছেন যে ‘কেন্দ্রীয় সরকার সেতু তৈরি করুক, দেওয়াল নয়’।প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও একটি ভিডিও ট্যুইট করেছেন। তিনি লিখেছেন, “প্রধানমন্ত্রীজি আপনি কৃষকদের সাথে যুদ্ধ করছেন ?” পাশাপাশি বিজেপিশাসিত সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে অন্যান্য বিরোধী দলগুলিও।
উল্লেখ্য, শুধুমাত্র প্রশাসনের গাড়ি ছাড়া অন্য কোনও গাড়ি যাওয়ার অনুমতি মিলছে না। গাজীপুর-মেরঠ হাইওয়ে ধরে উত্তরপ্রদেশ থেকে কৃষকরা দিল্লীতে যাতে ঢুকতে না পারে, তার জন্য সেই হাইওয়ের উপর ৪ স্তরীয় নিরাপত্তার দেওয়াল তোলা হয়েছে। দিল্লী-হরিয়ানা সীমানায় হাইওয়েতে অস্থায়ী ইঁট, সিমেন্টের দেওয়াল তুলে দেওয়া হয়েছে। গাজীপুর সীমানায় পুলিশ এবং র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স-এর জওয়ানরা সর্বক্ষণ নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছেন। নজরদারি চালাতে ব্যবহার করা হচ্ছে ড্রোন। টিকরি সীমানাতেও একই ছবি ধরা পড়েছে। বেশ কয়েক স্তরে নিরাপত্তার দেওয়াল তোলা হয়েছে সেখানে। রাস্তার উপর বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে পেরেক আর গজাল। যাতে কৃষকরা ট্র্যাক্টর নিয়ে এগোতে গেলে সেখানেই আটকে যান। সবমিলিয়ে সিঙ্ঘু, টিকরি এবং গাজীপুর—দিল্লির ৩ সীমানাকে এ ভাবেই নিরাপত্তার দুর্গে পরিণত করে ফেলা হয়েছে। দেখে মনে হতে পারে, এ যেন দুই বিবাদমান দেশের আন্তর্জাতিক সীমান্ত। এহেন আচরণের কারণে স্বাভাবিকভাবেই সমালোচনার মুখে কেন্দ্র।