২০২০ এর ২৯ সেপ্টেম্বরই ‘চা সুন্দরী’ প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নতুন বছরের দ্বিতীয় মাসের দ্বিতীয় দিনেই সেই প্রকল্পের সুবিধা উপভোক্তাদের হাতে পৌঁছে দিলেন তিনি। মঙ্গলবার ফালাকাটায় ৩৬০০ উপভোক্তার হাতে তুলে দেওয়া হল অ্যালটমেন্ট লেটার। যার মাধ্যমে চা বাগানের শ্রমিকরা পাচ্ছেন বাড়ি। আবাসন দপ্তর সেই বাড়ি বানিয়ে দিচ্ছে। বাড়ি পিছু খরচ সাড়ে ৫ লাখ টাকা করে। চা বাগান নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সংঘাত বরাবরই। অধিগ্রহণ থেকে বাগানের শ্রমিক অনেক বিষয় থেকে বঞ্চিত করা হয়, এই অভিযোগে বারবার সরব হয়েছেন মমতা। এর আগে ২ টাকা কিলো দরে চাল এবং বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া শুরু করেছে। এবার তাতে যোগ হল আরও একটি প্রকল্প। যা শুনে যারপরনাই খুশি চা শ্রমিকরা। প্রকল্পের নাম ‘চা-সুন্দরী’। বাংলার বাড়ি, বাংলা আবাস যোজনা রাজ্যের নিম্নবিত্ত, বিপিএল তালিকাভুক্ত মানুষজনকে সহজ উপায়ে বাড়ির মালিক হওয়ার সুযোগ দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, এই প্রকল্পগুলিতে রাজ্য সরকার নিজেই বাড়ি তৈরি করে এঁদের হাতে বাড়ির চাবি তুলে দিয়েছে। এবার চা বাগানের শ্রমিকদেরও সেই সুযোগ দিল রাজ্য সরকার। উত্তরবঙ্গে এসে তিন মাস আগেই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন ‘চা সুন্দরী’ প্রকল্পের। যাতে শুধুমাত্র চা বাগানের শ্রমিক, যাঁদের নিজস্ব বাড়ি নেই, তাঁদের জন্য রাজ্য সরকার এলাকার মধ্যে তৈরি করে দেবে বাড়ি। এর জন্য বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে ৫০০ কোটি টাকা। খুব দ্রুত এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি। আজ মুখ্যমন্ত্রীর তরফে সেই বাড়ি হাতে তুলে দেওয়া হয়। যার জেরে আনন্দের হাওয়া বাংলায় চা বলয়ে।
প্রকল্পটিতে বিভিন্ন চা বাগানে শ্রমিকদের জন্যে তৈরি হচ্ছে বাড়ি। ৩৬৯৪ বাড়ি হচ্ছে প্রথম ধাপে। আগামী তিন বছরে ধাপে ধাপে বাকি চা বাগানে হবে। আবাসন দফতর বাড়ি বানাবে। শ্রম দফতর এটা দেখবে। উত্তরের ৩৭০ চা বাগান এই প্রকল্প এর আওতায়। ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। গত লোকসভা ভোটে রাজ্যের চা বলয়ে তৃণমূলের ফলাফল অত্যন্ত খারাপ। আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি কেন্দ্রে একচেটিয়া জয় পেয়েছেন বিজেপি প্রার্থীরা। জন বার্লা থেকে শুরু করে জয়ন্ত রায়, চা শ্রমিকদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তার জেরে জয়ী হয়েছেন। চা বলয়ে সেই হারিয়ে যাওয়া জমি পুনরুদ্ধারে একুশে ঝাঁপিয়ে পড়তে চলেছে তৃণমূল। যে কারণেই এর আওতায় এসেছে ২ লক্ষ ৬৪ হাজার ১৫১ জন উপভোক্তা।