রাজনৈতিক উত্তাপ ও ডামাডোল তুঙ্গে উঠল মায়ানমারে। সামরিক অভ্যুত্থানের আশঙ্কায় ঘৃতাহুতি দিয়ে সোমবার সকালে দেশটির রাষ্ট্রপ্রধান আং সান সু কি-সহ শাসকদলের বেশ কয়েকজন নেতাকে আটক করল সেনাবাহিনী। মায়ানমারের শাসকদল ‘ন্যাশনাল লিগ অফ ডেমোক্র্যাটিক পার্টি’র মুখপাত্র মায়ও নায়ান্ট রয়টার্সকে জানিয়েছেন, আজ ভোরে আচমকা কউন্সিলর সু কি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও অন্য নেতাদের আটক করা হয়েছে।
মায়ও জনতার কাছে আবেদন জানিয়ে বলেন, “আমি জনগণের কাছে আর্জি জানাচ্ছি এই ঘটনায় আবেগে ভেসে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন না। সবাই আইন মেনে চলুন।” প্রসঙ্গত, সোমবার অর্থাৎ আজ থেকেই দেশটিতে সংসদের অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই সেনাবাহিনীর এহেন পদক্ষেপ সামরিক অভ্যুত্থান বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। এদিকে, সকাল থেকেই মায়ানমারের রাজধানী নাইপদাওয়ের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। একটি ফেসবুক পোস্টে সরকার নিয়ন্ত্রিত চ্যানেল এমআরটিভি জানিয়েছে, প্রযুক্তিগত সমস্যার জন্য আপাতত তারা কোনও প্রোগ্রাম চলতে পারছে না। তবে এর নেপথ্যে সেনাবাহিনীর হাত রয়েছে বলেই অনুমান করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত বছর বিরোধীদের পরাজিত করে ক্ষমতায় ফিরছে আং সান সু কি’র দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। মায়ানমার সংসদের নিম্নকক্ষের ৪২৫টি আসনের মধ্যে ৩৪৬টিতে জয়ী হয় তারা। কিন্তু, রোহিঙ্গা ইস্যু থেকে শুরু করে একাধিক বিষয়ে বিগত দিনে সেনাবাহিনীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে সু কি সরকারের। নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগও করেছে সর্বশক্তিমান ‘জুন্টা’। বলে রাখা ভাল, ২০০৮ সালে সামরিক নজরদারিতে যে সংবিধান তৈরি হয়েছে, সেখানে পার্লামেন্টে কোনও বড় আইন রুখে দেওয়ার মতো আসন সেনাবাহিনীকে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকগুলিও রয়েছে সেনার হাতেই। ফলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হলেও, গণতান্ত্রিক শাসন এখনও আসেনি মায়ানমারে।