রীতিমতো শুরু হয়ে গেছে ভোটযুদ্ধের কাউন্টডাউন। আর ক’দিন পরেই বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। শীঘ্রই ভোটের দিনক্ষণও ঘোষণা করা হবে। কিন্তু তার আগে হঠাৎই বদলি করা হল রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তিন আধিকারিককে।সরকারীভাবে কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি না হলেও, কমিশন সূত্রে খবর মিলেছে এমনটাই। জানা গিয়েছে, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ডেপুটি সিইও শৈবাল বর্মণ, অনামিকা চট্টোপাধ্যায় এবং অমিতজ্যোতি ভট্টাচার্যকে বদলি করা হবে। এরা তিনজনেই দীর্ঘদিন ধরে রাজ্য নির্বাচন কমিশনে ডেপুটি সিইও পদে কর্মরত ছিলেন। দিল্লী নির্বাচন কমিশনের তরফে এই নির্দেশ দেওয়া হলেও সরকারীভাবে এখনও কোনও নির্দেশিকা জারি করা হয়নি। এই নির্দেশকে ভোটের আগে রুটিন বদলি হিসেবে দাবি করছে নির্বাচন কমিশন।
স্বভাবতই এই ঘটনা ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। রাজনৈতিক মহলের মত, এতে বিজেপি তথা বিরোধীদের প্ররোচনা রয়েছে। সম্প্রতি এ রাজ্যে এসেছিল কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ। তখন বিজেপি-সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলো আবেদন করেছিল, যে আধিকারিকরা দীর্ঘদিন ধরে কমিশনের অফিসে কাজ করছেন, সেই অফিসারদের কেন বদলি করা হচ্ছে না ? নিয়ম অনুযায়ী, সরকারী চাকরিতে তিন বছর অন্তর বদলি করা হয়। কিন্তু এই তিন ডেপুটি সিইও-র ক্ষেত্রে তেমনটা কেন হয়নি ? এই প্রশ্ন তুলে দেয় বিজেপি প্রতিনিধিদল। তারপরই নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত।
উল্লেখ্য, গত ২১শে জানুয়ারি মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরার নেতৃত্বে রাজ্যে এসেছিল কমিশনের ফুল বেঞ্চ। তারপরই রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আজিজ আফতাবের সঙ্গে বৈঠকে বসেন তাঁরা। ঘণ্টাখানেকের বৈঠকে নিজেদের কড়া মনোভাবের কথা স্পষ্ট করে দেয় ফুল বেঞ্চ। সিইওর দপ্তরের কাজে সন্তোষ প্রকাশ করে তাঁকে অভয় দিয়ে কমিশনের বার্তা, এ রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কমিশন যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। কমিশন জানিয়েছে, নির্দেশ পালনে যেন কোনও খামতি না থাকে। পাশাপাশি নির্বাচনের কাজে যুক্ত আধিকারিকদের যথাসম্ভব নিরপেক্ষতার সঙ্গে কাজ করার নির্দেশিকা দিয়েছে তারা। এবার বাংলায় ১০০ শতাংশ হিংসামুক্ত নির্বাচন করতে কমিশন বদ্ধপরিকর। সেজন্য যা যা পদক্ষেপ প্রয়োজন তা নেওয়া হবে, সাফ জানিয়েছে কমিশন। কোনওরকম ভুল বরদাস্ত করা হবে না। জেলা প্রশাসনগুলিকে কমিশনের এই বার্তাই স্পষ্ট করে দিতে বলেছে বেঞ্চ।