জোরকদমে এগিয়ে চলেছে রাজ্য সরকারের প্রকল্প ‘স্বাস্থ্যসাথী’। যথারীতি খুশি সাধারণ মানুষ। এবার স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে এক বৃদ্ধার ক্যানসারের চিকিৎসার ব্যবস্থা করল মমতা সরকার। বৃদ্ধার নাম শান্তিরানী কুন্ডু। তিনি আরামবাগের বসন্তপুরের বাসিন্দা। আজ, শুক্রবার কলকাতার রাজারহাট টাটা মেমোরিয়াল ক্যান্সার হাসপাতালে ভর্তি হতে চলেছেন তিনি। স্বস্তির নিঃশ্বাস বৃদ্ধার পরিবারে। মুখ্যমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বৃদ্ধার পরিবার।
ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে শান্তিরানীদেবীর স্বামীর। বছর খানেক আগে একই রোগে আক্রান্ত বড় মেয়েকেও হারিয়েছেন তিনি। এবার নিজে আক্রান্ত হয়েছেন ক্যান্সারে। প্যানক্রিয়াসে ক্যান্সার। একথা শুনেই পরিবারের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। কীভাবে তাঁর চিকিৎসা করাবেন, ভেবে পাচ্ছিলেন না পরিবারের লোকজন। এবার তাঁদের আশাপূরণ করল স্বাস্থ্যসাথী কার্ড। এই কার্ড নিয়েই আজ, শুক্রবার কলকাতার রাজারহাট টাটা মেমোরিয়াল ক্যান্সার হাসপাতালে ভর্তি হতে চলেছেন শান্তিরানীদেবী। তাঁর ভাইপো মানস কুণ্ডু জানান, “ছ’মাস আগে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করানো হয়েছিল। তার জন্যই এখন বড় হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে পারছি। খুব বড় উপকার হয়েছে আমাদের। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড না থাকলে ভালো হাসপাতালে জেঠিমার চিকিৎসা করাতে পারতাম না। আমরা এর জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকব।”
স্থানীয় সূত্রে অনুযায়ী, শান্তিরানিদেবীর বয়স ৮০ ছুঁইছুঁই। দুই ছেলেকে নিয়ে তিনি বসবাস করেন। ২০১০ সালে তাঁর স্বামী কেনারাম কুণ্ডু ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তাঁর বড় মেয়ে বাণী কুণ্ডুও ২০১৯ সালে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। চারমাস আগে শান্তিরানীদেবী হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন। ঘন ঘন বমি ও কোনও কিছু খেতে না পারায় তাঁর পরিবারের লোকজন আরামবাগে ডাক্তার দেখিয়েছিলেন। চিকিৎসক তাঁকে কলকাতায় দেখানোর পরামর্শ দেন। গত মঙ্গলবার শান্তিরানীদেবীকে নিয়ে তাঁর পরিবারের সদস্যরা কলকাতায় ডাক্তার দেখাতে যান। সেখানে স্ক্যানের পর চিকিৎসক প্যানক্রিয়াসে ক্যান্সারের কথা জানান। এই মারণ রোগের চিকিৎসার জন্য কোথা থেকে টাকা আসবে ভেবে পাচ্ছিলেন না পরিবারের লোকজন। তখনই তাঁদের মনে পড়ে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের কথা। এরপর পরিবারের সদস্যরা রাজারহাটে টাটা মেমোরিয়াল ক্যান্সার হাসপাতালে যোগাযোগ করেন। সেখানে এই কার্ডের মাধ্যমে চিকিৎসা করানো যাবে বলে জানানো হয়েছে। এতে অনেকটাই স্বস্তি ফিরেছে তাঁর পরিবারে। বৃদ্ধা ও তাঁর পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন আরামবাগ পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী। “আমার সঙ্গে ওই পরিবারের কথা হয়েছে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে তাঁরা কলকাতায় চিকিৎসা করাতে পারবেন। আমরা ওই পরিবারের পাশে রয়েছি।” জানিয়েছেন স্বপনবাবু।