এবার ‘লাভ জেহাদ’ নিয়ে অপ্রত্যাশিত রায়ে জোর ধাক্কা খেল যোগী সরকার। এক বিবাহিত মুসলিম যুবক ও এক হিন্দু যুবতীকে একসঙ্গে থাকার অনুমতি দিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। আদালত জানিয়েছে, সকলেরই নিজের ইচ্ছেমতো বাঁচার অধিকার আছে। যোগী প্রবর্তিত আইনের পুরোদস্তুর বিপরীত পথে হেঁটে এক বেনজির উলটপুরাণের ইতিহাস গড়ল এলাহাবাদ আদালত।
প্রসঙ্গত, চলতি মাসেই ‘লাভ জেহাদ’ অর্থাৎ জোর করে ভিন ধর্মের যুবতীকে বিয়ে অথবা বিয়ের পর জোর করে ধর্ম পরিবর্তন করার বিরুদ্ধে আইন এনেছে উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকার। এই মাসেরই সাত তারিখে সলমন ওরফে করণের সঙ্গে বিয়ে হয় শিখার। এ বিয়েতে শিখার পরিবারের মত ছিল না। পরিবারের তরফে অভিযোগ করা হয়, শিখা নাবালিকা। তাঁর ইচ্ছের বিরুদ্ধে, জোর করে বিয়ে করা হয়েছে তাঁকে। এরপর শিশু কল্যাণ কমিটির তরফে শিখা ও সলমমনকে আলাদা করা হয়। শিখাকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয় ওই কমিটি। কিন্ত এতে বিন্দুমাত্র দমেননি সলমন।এলাহাবাদ হাই কোর্টে পাল্টা মামলা করেন তিনি। সেই শুনানিতে শিখা নিজের জন্ম শংসাপত্র জমা করেন। তাতে দেখা যায় ১৯৯৯ সালের ৪ঠা অক্টোবর শিখার জন্ম হয়েছে। বিচারপতি পঙ্কজ নকভি ও বিচারপতি বিবেক আগরওয়ালের এজলাসের শুনানিতে দেখা যায় যে, শিখা সাবালিকা। শিখা আদালতে জানান, নিজের ইচ্ছেতেই সলমনকে বিয়ে করেছেন তিনি। অবশেষে লড়াইয়ের পর জয় পেল ভালবাসা। খুশি সলমন ও শিখা।
এদিন শুনানির পর ওই যুবক-যুবতীকে একসঙ্গে থাকার নির্দেশ দেন বিচারপতিরা। রায়দানের সময় তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেছিলেন এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারকরা। জানান, শিখা নিজের ইচ্ছেমতো কাজ করতে পারে। তৃতীয় কোনও শক্তি তাঁকে বাধা দিতে পারে না। এমনকী, প্রয়াগরাজের এসএসপিকে এই দম্পতির নিরাপত্তার দিকে নজর রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতিরা। উল্লেখ্য, এই আইনে ইতিমধ্যে ৩৫ জনকে আটক করেছে যোগী সরকার। তবে তা মধ্যে অনেকের বিরুদ্ধেই অভিযোগ প্রমাণ করা যায়নি। এমন আবহে এলাহাবাদ হাই কোর্টের এই পর্যবেক্ষণ বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। এই রায় নিঃসন্দেহে ভারতীয় সমাজের ইতিহাসে জায়গা করে নেবে, এমনটাই বলছে মানুষ। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রায় ধর্মের ধ্বজাধারী কিছু বিভেদপ্রবণ রাজনীতিবিদদের গালে একটি সজোর থাপ্পড় কষাল।