মমতা কথা দিয়েছিলেন, ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পের মাধ্যমে সরকার পৌঁছে যাবে মানুষের দোরগোড়ায়। মেটাবে তাদের সমস্যা। এবার দুর্ঘটনাগ্রস্ত ছাত্রীর কাছে পৌঁছে গেল ‘দুয়ারে সরকার’। তার চিকিৎসার দায়িত্ব তুলে নিল স্বাস্থ্যসাথী কার্ড। মাত্র এক ঘণ্টারও কম সময়ে ব্যবস্থা হল আহত ছাত্রীর চিকিৎসার। স্বাভাবিককভাবেই প্রশাসনের এই সহযোগিতায় আনন্দিত ও আপ্লুত আহত মেয়েটির পরিবার।
প্রসঙ্গত, আহত ওই ছাত্রীর নাম অনুষ্কা মাহাতো (১৮)। হুগলির ভদ্রেশ্বরের খানপুরের বাসিন্দা সে। স্থানীয় কলেজের বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী অনুষ্কা। সোমবার দুপুরে তেলিনিপাড়ায় গৃহশিক্ষকের কাছে পড়া শেষ করে সাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিল অনুষ্কা। ফেরার পথে ভদ্রেশ্বর গেটবাজারে জিটি রোডের উপর পিছন দিক থেকে একটি লরি তাকে ধাক্কা মারে। সাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে অনুষ্কা। লরির সামনের চাকা তার ডান পায়ের উপর উঠে যায়। স্থানীয়রা লরিটিকে আটকে রেখে ভদ্রেশ্বর থানায় খবর দেন। তড়িঘড়ি ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছাত্রীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। কিন্তু এরকম পরিস্থিতিতে কলকাতার হাসপাতালে ব্যয়বহুল চিকিৎসার খরচ কোথা থেকে আসবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন অনুষ্কার অভিভাবকেরা।
এমতাবস্থায় সব দুশ্চিন্তার অবসান ঘটিয়ে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড নিয়ে হাজির হয়ে যায় ‘দুয়ারে সরকার’। ভদ্রেশ্বর পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য প্রকাশ গোস্বামী দুর্ঘটনার খবর জানতে পারার পরই ঘটনাস্থলে যান। চিকিৎসকের পরামর্শমতো কলকাতার হাসপাতালে আহতের পরিবারের চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য নেই জানার পরই তিনি মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনকে ফোন করে বিষয়টি জানান। মন্ত্রীই উদ্যোগ নিয়ে হুগলির জেলাশাসককে ফোন করে জরুরি ভিত্তিতে ওই ছাত্রীর স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের ব্যবস্থা করে দেন। আর এই স্বাস্থ্যসাথীর দৌলতেই শেষ পর্যন্ত ওই ছাত্রীকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়। আহত অনুষ্কার দাদু রাজেন্দ্র মাহাতো জানান, তিনি ও তাঁর মেয়ের পরিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পরম কৃতজ্ঞ। তাঁদের মতো পরিবারের পক্ষে এমন খরচসাপেক্ষ চিকিৎসা করানো কখনওই সম্ভব ছিল না, জানিয়েছেন তিনি।