একুশেই বিধানসভা নির্বাচন বাংলায়। আর ভোটের আগে রাজ্য সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে বাংলায় অবৈধ কয়লার কারবার নিয়ে সরব হয়েছেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে শুরু করে বিজেপির সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। ইতিমধ্যে ‘অতিসক্রিয়’ হয়ে পশ্চিম বর্ধমানে অভিযানও চালিয়েছে ইডি, সিবিআই-এর মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি। কিন্তু সোমবার খোদ বিজেপিই এক বেআইনি কয়লার কারবারে অভিযুক্তকে দলে নিয়েছে। আর তাতেই সুর চড়িয়েছে তৃণমূল। তৃণমূল ও পুলিশ সূত্রের দাবি, বর্তমানে হোটেল ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত রাজেশ (ওরফে রাজু) ঝা বেআইনি কয়লার কারবারে অভিযুক্ত। তাঁর বিরুদ্ধে মামলাও চলছে। তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘মাফিয়ার দলে পরিণত হয়েছে বিজেপি। রাজুর যোগদানের কয়েক মাস আগে কলকাতায় গিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন আর এক কয়লা-মাফিয়া, রানিগঞ্জের বক্তারনগরের বাসিন্দা জয়দেব খাঁ।’ আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, রাজুর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা চলছে। তিনি এখন জামিনে রয়েছেন।
সোমবার দুর্গাপুর সভা করেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ ও ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ। দুর্গাপুরের পলাশডিহার সভামঞ্চে অর্জুন সিংহ ও বিজেপির পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের হাত থেকে দলীয় পতাকা নিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন রাজু। তখন মঞ্চ থেকে রাজুর পরিচয় দেওয়া হয় ‘বিশিষ্ট সমাজসেবী’ হিসেবে। যদিও পুলিশ সূত্রের দাবি, রাজুর উত্থান রানিগঞ্জ থেকে। প্রথম জীবনে কয়লার ট্রাকের খালাসি ছিলেন। বাম জমানা থেকে কয়লা-মাফিয়া হিসেবে পরিচিত। ২০১১ সালের আগে, খনি অঞ্চলে প্রায় দেড় দশক ধরে অবৈধ কয়লার কারবারে রাজুর নাম ছিল প্রথম সারিতে। অণ্ডাল থেকে ডানকুনির আগে পর্যন্ত তাঁর কয়লার ‘প্যাড’ (অবৈধ কারবারের রসিদ) চলত। বীরভূমের বিভিন্ন থানাতেও অভিযোগ রয়েছে। বেআইনি কয়লা কারবারে যুক্ত থাকার একটি মামলায় ২০০৬ সালে কয়েক দিন জেল খাটেন। কয়লা সংক্রান্ত নানা অভিযোগে ২০১১-এর ৩ জুলাই রাজুকে পুলিশ রানিগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে। এর পরেও তিনি বহু বার গ্রেফতার হন।