কৃষক আন্দোলন থামাতে প্রথম থেকেই বিজেপির তরফে এই অভিযোগ করা হয়েছিল যে, বিরোধীরা কৃষকদের ভুল পথে চালিত করছে। শুধু তাই নয়, বিজেপির বিভিন্ন স্তর থেকে অভিযোগ এসেছে যে এই কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে খালিস্তানি পন্থী জঙ্গীরা। আইএসআই এবং চীনের ইন্ধনে এই আন্দোলন বৃহৎ আকার ধারণ করছে বলেও অভিযোগ তুলেছে গেরুয়া শিবির। তবে কিছুতেই কিছু না হওয়ায় রবিবার আচমকাই দিল্লীর রকাবগঞ্জ সাহিব গুরুদ্বারে পৌঁছে চমক দেন মোদী। শিখ গুরু তেগ বাহাদুরের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শ্রদ্ধা জানান তিনি। গুরুদ্বার ঘুরেও দেখেন। পরে টুইট করে বলেন, ‘রকাবগঞ্জ সাহিব গুরুদ্বারে সকালে প্রার্থনা করলাম। এখানে গুরু তেগ বাহাদুরের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছিল। নিজেকে ধন্য মনে করছি’। প্রধানমন্ত্রী যখন গুরুদ্বারে, তখন কিছুটা দূরেই কৃষক আন্দোলনে এ যাবৎ মৃত্যু হওয়া সতীর্থদের সম্মান জানাতে শ্রদ্ধাঞ্জলি দিবস পালন করছিলেন আন্দোলনকারীরা। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ছ’বছরের মাথায় তাঁর ওই গুরুদ্বারে যাওয়াকে ‘লোক দেখানো’ বলে মন্তব্য করে সরব হয়েছেন বিরোধী কংগ্রেস ও আপ নেতৃত্ব।
আপ নেতা সৌরভ ভরদ্বাজ বলেন, ‘বোঝাই যাচ্ছে পাঞ্জাবের মানুষকে বার্তা দিতে আজ গুরুদ্বারে গেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু আন্দোলনকারীরা ঠাণ্ডায় মারা যাচ্ছেন। কেন তাদের সম্পর্কে একটি কথাও নেই প্রধানমন্ত্রীর মুখে? আন্দোলনের ঠেলায় এখন চাপে পড়ে গুরুদ্বার সফরের মাধ্যমে তিনি কি বোঝাতে চাইছেন, তা সকলের কাছেই স্পষ্ট।’ কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালার কথায়, ‘এখনও পর্যন্ত ৩৩ জন কৃষক মারা গিয়েছেন। আজ আন্দোলনকারীদের শ্রদ্ধাঞ্জলি দিবস ছিল। তা-ও প্রধানমন্ত্রী নীরব কেন? কেন মৃত কৃষক ও কৃষকদের পরিবারগুলির উদ্দেশ্যে একটি কথাও বললেন না তিনি?’ সাংবাদিক সম্মেলনে ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের নেতা জগজিৎ সিংহ ডালেওয়ালা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ছ’বছরের মাথায় মোদীর রাকাবগঞ্জ গুরুদ্বার সফরে তাঁর সুমতি ফিরবে। আশা করছি, এর পর উনি কৃষি আইন প্রত্যাহার করে নেবেন। তা না হলে আগামী ২৭ ডিসেম্বর, রবিবার প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পুরো সময়টা দেশের মানুষকে নিজের ঘরে বসে থালা বাজানোর অনুরোধ রাখছি। যাতে তাঁর কন্ঠস্বর চাপা পড়ে যায়।’