কেরালার তিরুবনন্তপুরমের রাজীব গান্ধী বায়োটেকনোলজি কেন্দ্রের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের নাম প্রাক্তন সঙ্ঘপ্রধান তথা দেশে উগ্র হিন্দুত্ববাদী মতাদর্শের অন্যতম প্রবর্তক এম এস গোলওয়ালকরের রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার।
এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী হর্ষবর্ধন জানান, রাজীব গান্ধী সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ক্যাম্পাসের নাম ‘শ্রী গুরুজি মহাদেব সদাশিব গোলওয়ালকর ন্যাশনাল সেন্টার ফর কমপ্লেক্স ডিজিস ইন ক্যানসার অ্যান্ড ভাইরাল ইনফেকশন’ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র সরাকার। হর্ষবর্ধনের এই ঘোষণার পরই শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক। একযোগে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছে কংগ্রেস এবং বামেরা। তাদের প্রশ্ন, ধর্মান্ধতা ছাড়া বিজ্ঞান গবেষণায় গোলওয়ালকরের অবদান কী?
কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর টুইটারে প্রশ্ন তুলছেন, ‘ধর্মান্ধতার রোগ ছড়ানো ছাড়া বিজ্ঞানের প্রতি গোলওয়ালকরের অবদানটা কী? যে ব্যক্তি হিটলারকে আদর্শ মেনে চলত, যে প্রকাশ্যে বিজ্ঞানের থেকে ধর্মবিশ্বাসকে বড় করে দেখিয়েছে, তাঁর নামে কেন বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের নাম হবে? বিজেপির কি এমন কেউ নেই, যিনি রাজীব গান্ধীর মতো বিজ্ঞানের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন? যিনি অন্তত বিজ্ঞানীদের উৎসাহ দিতেন, তাদের জন্য সাহায্য জোগাড় করতেন?’ একই প্রশ্ন তুলেছেন কেরল বিধানসভার বিরোধী দলনেতা রমেশ চেন্নিথালা। তিনি বলছেন, ‘এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করছি। নাম পাল্টানোর আগে বিজেপিকে কৈফিয়ত দিতে হবে। কেরলবাসীকে জানাতে হবে, বিজ্ঞানচর্চায় গোলওয়ালকরের অবদান কী?’
কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন আবার একেবারে সরকারিভাবে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলছেন নাম যদি পাল্টাতেই হয়, তাহলে সেটা কোনও খ্যাতনামা ভারতীয় বিজ্ঞানীর নামে হোক। কেন্দ্রকে লেখা এক চিঠিতে তিনি দাবি করেছেন, প্রাথমিকভাবে রাজ্য সরকার পরিচালিত ওই গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালন ভার কেন্দ্রকে দেওয়া হয়েছিল সেটিকে যাতে আন্তর্জাতিক মানের করে গড়ে তোলা যায় সেজন্য। তাই কেরালা সরকার চায়, যদি কেন্দ্র নাম বদলাতেই চায় তাহলে কোনও খ্যাতিসম্পন্ন বিজ্ঞানীর নামেই তা নামাঙ্কিত করা হোক। কেন্দ্র যদি চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলে থাকে, তাও সেটা পুনর্বিবেচনা করা হোক।