উত্তরপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশের মত বিজেপি শাসিত রাজ্যে লাভ জেহাদ নিয়ে বিতর্ক যেখানে ক্রমশ বাড়ছে, সেখানে আসামে বিবাহ নিয়ে আসছে নতুন আইন। তাতে বলা হয়েছে, বিয়ের একমাস আগে বর ও কনেকে তাঁদের ধর্ম ও আয় জানাতে হবে। সরকারের দাবি, এর ফলে ‘আমাদের বোনদের’ ক্ষমতায়ন হবে। আগামী বছরেই নির্বাচন হবে আসামে। বিজেপি আত্মবিশ্বাসী, তারাই জিতবে। আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেছেন, উত্তরপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশে যেমন লাভ জেহাদ নিয়ে আইন করা হয়েছে, আসামের আইন তেমন হবে না। কিন্তু তার উদ্দেশ্য একই। তা হল, মহিলাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “আমরা লাভ জেহাদের বিরুদ্ধে আইন করছি না। আমাদের আইনে সব ধর্মকেই অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই আইনে বিবাহে স্বচ্ছতা আসবে। আমাদের বোনদের ক্ষমতায়ন হবে।” প্রস্তাবিত আইন সম্পর্কে তিনি বলেন, বিয়ের আগে সকলকে ধর্ম ও উপার্জনের উৎস সম্পর্কে জানাতে হবে। অনেক সময় দেখা যায়, একই ধর্মে বিবাহ করার পরে মেয়েটি দেখে, তার স্বামী বেআইনি ব্যবসায় জড়িত। নতুন আইনে বর ও কনেকে সরকার একটি ফর্ম দেবে। তাতে তাঁদের পরিবার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য, উপার্জন, শিক্ষাগত যোগ্যতা, স্থায়ী ঠিকানা ও ধর্ম জানাতে হবে।
হিমন্ত বিশ্বশর্মা এদিন বলেন, “উত্তরপ্রদেশ বা মধ্যপ্রদেশে যে আইন করা হয়েছে, তার সঙ্গে আসামের আইনের কিছু মিল থাকবে।” অর্থাৎ, আসাম সরাসরি লাভ জেহাদের বিরুদ্ধে আইন করবে না। কিন্তু কোনও কোনও রাজ্যে লাভ জেহাদের বিরুদ্ধে যে আইন বা অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে, তার সঙ্গে আসামের প্রস্তাবিত আইনের মিল থাকবে। লাভ জেহাদ নিয়ে ইতিমধ্যে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে একাধিকবার বিতর্ক হয়েছে। কিছুদিন আগেই শোনা গেছে, জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যান রেখা শর্মা মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারির সঙ্গে লাভ জেহাদ নিয়ে আলোচনা করেছেন।
গত ফেব্রুয়ারিতে সংসদে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছিল, চলতি আইনে লাভ জেহাদের কোনও সংজ্ঞা দেওয়া হয়নি। কোনও কেন্দ্রীয় সংস্থা লাভ জেহাদ নিয়ে মামলাও করেনি। কিন্তু গত ৬ নভেম্বর কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা বলেন, লাভ জেহাদের নামে যাতে ধর্মান্তরিত না করা হয়, সেজন্য তাঁর সরকার আইন আনতে চায়। একইদিনে হরিয়ানার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল ভিজ-ও বিধানসভায় জানান, তাঁর রাজ্যের সরকারও লাভ জেহাদের বিরুদ্ধে আইন করার কথা ভাবছে।