ভিন রাজ্যের নেতাদের বাংলার পর্যবেক্ষক নিয়োগ করেছে বিজেপি। তারপর থেকেই বহিরাগত ইস্যুতে সরগরম রাজ্যের রাজনীতি। এবার সেই নিয়ে গেরুয়া শিবিরের উদ্দেশ্যে তোপ দাগলেন তৃণমূল নেতা তথা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। বললেন, ‘বাংলার মাথায় অন্য রাজ্যের লোক বসানোর চেষ্টা বরদাস্ত করবে না বাঙালিরা।’
শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলনে বহিরাগতদের দিয়ে বাংলাকে পরিচালনার ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ব্রাত্য। তিনি বলেন, ‘যাঁরা বাঙালি সংস্কৃতি জানেন না তাঁদের হাতে বাঙালি জাতিকে নিয়ন্ত্রিত হতে হবে এই দুর্দশা এখনও আসেনি। কিন্তু অন্য রাজ্যের অবাঙালি মুখকে নেতা করে, মুখ্যমন্ত্রীর মুখ করে বাংলায় আনা হচ্ছে। বাংলার মাথায় অন্য রাজ্যের লোক বসানোর এই চেষ্টা বরদাস্ত করবে না বাঙালিরা।’ গেরুয়া শিবিরের উদ্দেশ্যে তাঁর কটাক্ষ, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট একজন বাঙালিকে তার মন্ত্রিসভায় রাখছেন, তার নাম অরুণ মুজুমদার। এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশ্ব বাংলার প্রতিফলন। বাংলার মুখ দিয়ে দেশকে দেখা, দেশের মাধ্যমে পৃথিবীকে দেখা, আন্তর্জাতিক স্তরে আজ বাংলাকে তুলে ধরা হচ্ছে। কিন্তু বিজেপির নেতারা সেসব বোঝেন না।’
দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রথম থেকেই বাঙালিরা লড়েছেন, সেখানে কতজন গুজরাতি ছিলেন প্রশ্ন ছোড়েন ব্রাত্য। তাঁর কথায়, ‘বাংলা উদারতায় বিশ্বাসী, তাই এ রাজ্যে অবাঙালি মন্ত্রী প্রতিনিধিত্ব করেন। কিন্তু উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত থেকে কেন কোনও বাঙালি মন্ত্রী হন না।’ ব্রাত্যর প্রশ্ন, ‘কেন আরএসএসের জন্মলগ্ন থেকে কোনও বাঙালি তার প্রধান হন না?’ গত সাত বছরে বাংলা থেকে একজন বিজেপি সাংসদকেও পূর্ণ মন্ত্রিত্ব দেওয়া হয়নি বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তৃণমূল নেতা। নাম না করে বাবুল সুপ্রিয়দের খোঁচা দিয়ে বলেন, ‘৭ বছর ধরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় কোন পূর্ণ বাঙালি ক্যাবিনেট মিনিস্টার নেই, হাফ প্যান্ট পড়া মন্ত্রীদের রেখে দিয়েছে।’
হিন্দু-মুসলমান তো বটেই মতুয়াদের নিয়েও বিজেপি রাজনীতি করছে বলে অভিযোগ করেন ব্রাত্য। তাঁর কথায়, ‘আজ যারা দলিত নমশূদ্র দের নিয়ে রাজনীতি করছে তাদের মন্ত্রিসভায় মতুয়াদের কোন স্থান নেই।’ ব্রাত্যর প্রশ্ন, ‘২০১৯ সালে মতুয়া ঠাকুরবাড়ি থেকেই একজন জনপ্রতিনিধি সাংসদ হয়েছেন অথচ তাকে কোন মন্ত্রিত্বই দেওয়া হয়নি, এতটা অপমান কি তাদের প্রাপ্য ছিল?’ বাংলায় মমতাই মতুয়াদের যোগ্য সম্মান দিয়েছেন দাবি করে ব্রাত্য বলেন, ‘রাম মন্দিরে ১৭ টা মন্দির আছে কিন্তু সেখানে একটাও হরিচাঁদ গুরুচাঁদের মন্দির নেই। বাংলায় আছে। এমনকি তাদের জন্য কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় করা হয়েছে। তাও ওনারা এসে বলছেন এখানে মন্দির করবেন অথচ যেখানে দরকার সেখানে মন্দির বানাচ্ছেন না।’