‘আগে চা বেচতেন, এখন স্টেশন বেচছেন। ঈশ্বর জানেন কোথায় গেল সেই চাওয়ালা। কে জানে যে রেল বছরের পর বছর লক্ষ লক্ষ মানুষকে রোজগার দেয়, সেই রেলের বেসরকারিকরণের প্রয়োজন কী?’ কথাগুলি মোদী বিরোধী কোনও কট্টর নেতা বলছেন না। বলছেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী তথা টিআরএস সুপ্রিমো কে চন্দ্রশেখর রাও। যিনি কিনা জাতীয় রাজনীতিতে মোদী, তথা বিজেপির দুঃসময়ের বন্ধু হিসেবে পরিচিত।
লোকসভা বা রাজ্যসভা, সংসদে যখনই কোনও বিল পাশ করাতে বা কোনও প্রস্তাবের স্বপক্ষে সমর্থনের প্রয়োজন পড়েছে, টিআরএস তখনই মোদী তথা বিজেপির সাহায্যে এগিয়ে এসেছে। কিন্তু হঠাৎ যেন বেসুরো গাওয়া শুরু করলেন টিআরএস সুপ্রিমো কেসিআর। তাঁর দাবি, নরেন্দ্র মোদী তথা বিজেপি মানুষের পক্ষে কাজ করছে না। গত সাড়ে ৬ বছরে তাদের সাফল্য বলে কিছুই নেই। কোনও কাজই করেনি। উল্টে নিজেদের ভুয়ো অপপ্রচার দিয়ে দেশকে আরও পিছনে ঠেলে দিয়েছে। কেসিআরের কথায়, ‘বিজেপি সরকার মিথ্যে অপপ্রচার করছে। নিজেরা তো কাজ করছেই না, উল্টে যারা মানুষের জন্য কাজ করছে, তাঁদের নিয়েও মিথ্যাচার করছে। সোশ্যাল মিডিয়াকে অ্যান্টি-সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিণত করেছে বিজেপি। ওদের কিছু বলার নেই, তাই পাকিস্তান, কাশ্মীর, পুলওয়ামা, এসব বলে মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে।’
আসলে বুধবার হায়দ্রাবাদে দলের সাংসদ, বিধায়কদের নিয়ে আসন্ন হায়দ্রাবাদ পুরনিগমের নির্বাচনের রণকৌশল ঠিক করতে বসেছিলেন কেসিআর। আর সেই বৈঠকে বিজেপিকেই পয়লা নম্বর শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করেছে তার দল। অথচ, বছর দেড়েক আগেও তেলেঙ্গানায় বিজেপির অস্তিত্ব ছিল না। প্রধান বিরোধী ছিল কংগ্রেস। কিন্তু গত লোকসভা নির্বাচন থেকেই ইঙ্গিত মিলছে তেলেঙ্গানায় বিজেপি বাড়ছে। সম্প্রতি স্থানীয় নির্বাচন এবং উপনির্বাচনেও কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বিজেপি। তাই কেসিআর আগেভাগেই সতর্ক হয়ে গেলেন। বিজেপিকে আর জায়গা ছাড়াটা ঠিক হবে না, বুঝতে পেরে মোদীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে দিলেন। তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ডিসেম্বরে ফের সব বিরোধী দলকে একত্রিত করবেন তিনি। মধ্য ডিসেম্বরেই হায়দ্রাবাদে বিরোধীদের মহাসমাবেশ হবে। যাতে দেশের সব বিরোধী দলকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। যদিও, কংগ্রেসকে সেই মঞ্চে ডাকা হবে না। এখন দেখার, কেসিআরের ডাকে কোন কোন বিরোধী দল সাড়া দেয়।