উৎসবের মরসুমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির দু’টি অনুষ্ঠান অত্যন্ত জনপ্রিয়। এক, কালীপুজো এবং দুই, ভাইফোঁটা। প্রথমটিতে সকলেরই ঢালাও আমন্ত্রণ থাকে। দ্বিতীয়টিতে আমন্ত্রণ পান কেবল বাছাই লোকজন। এবং বরাবরই সেই ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান আন্তরিকতার সঙ্গে হয়ে এসেছে। সে তিনি বিরোধী নেত্রীই থাকুন বা মুখ্যমন্ত্রী। তবে করোনা আবহে সামাজিক দূরত্ববিধি বজায় রাখার জন্য এই প্রথম বাড়িতে ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান বাতিল করলেন মমতা। একে ‘সচেতন এবং ইতিবাচক পদক্ষেপ’ বলেই মনে করছেন দলের সকলে। দলের এক শীর্ষনেতার কথায়, ‘দিদি প্রতিবারই খুব আন্তরিকতা নিয়ে ভাইফোঁটা দেন। কিন্তু এ বার করোনার জন্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা বাধ্যতামূলক। সেই সচেতনতা থেকেই দিদি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জানি এতে ওঁরও খারাপ লেগেছে। যেমন মনখারাপ হচ্ছে আমাদেরও। কিন্তু এই কঠিন সময়ে এই সচেতনটা না দেখালেও নয়। দিদি সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন।’
তবে সামনে বসে ভাইফোঁটা না দিলেও যাঁদের তিনি নিয়ম করে প্রতিবার ফোঁটা দেন, তাঁদের সকলের বাড়িতে সোমবার, ভাইফোঁটার দিন পৌঁছেছে মমতার উপহার। সকলকেই তিনি নিজে ফোন করে জানিয়েছেন, এ বার সময়টা ‘অন্যরকম’। বাধ্য হয়েই তাই এ বার ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান বাতিল করতে হচ্ছে। তেমনই এক নেতা সোমবার দুপুরে বললেন, ‘গত চার-পাঁচদিন ধরেই শুনছিলাম, এ বার দিদির বাড়িতে ভাইফোঁটা হবে না। শুনে একটু মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ভেবে দেখেছিলাম, এই পরিস্থিতিতে এটাই সঠিক সিদ্ধান্ত। তার পর সকালেই উনি ফোন করলেন। তার পর দেখলাম, ওঁর ভাইফোঁটার প্রীতি উপহারও আমার বাড়িতে চলে এসেছে। উপহার পেয়ে ফোনেই আশীর্বাদ চেয়ে নিলাম। আশা করি, আগামী বছর এই পরিস্থিতি কেটে যাবে। তখন নিশ্চয়ই আবার সামনে বসে ওঁর হাত থেকে কপালে ফোঁটা নিতে পারব।’