আগেই মন্দার কোপে ভুগছিল বাজার। তার ওপর করোনার ধাক্কায় এখন বেসামাল ভারতীয় অর্থনীতি। এই পরিস্থিতির মধ্যেই প্রায় ৮৬২ কোটি টাকায় নতুন সংসদ ভবন তৈরির দায়িত্ব তুলে দেওয়া টাটা গোষ্ঠীর হাতে। ইতিমধ্যেই সংসদ ভবনের সামনের রাস্তা ধীরে ধীরে ঘিরে ফেলা হচ্ছে। শুরু হয়ে গিয়েছে খোঁড়াখুঁড়ি। টাটা প্রোজেক্টস ও কেন্দ্রীয় পূর্ত দফতরের নাম লেখা নীল রঙের বোর্ড পরপর সারি দিয়ে সাজানো সেখানে। সরকারি সূত্রের ইঙ্গিত, দেরি না করে ডিসেম্বরেই রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিতে শিলান্যাসের মাধ্যমে নতুন সংসদ ভবনের কাজ শুরু হয়ে যাবে। তার আগে মোদী সরকার সুপ্রিম কোর্টে যুক্তি দিল, নতুন সংসদ ভবন-সহ সেন্ট্রাল ভিস্টা প্রকল্পে অর্থের অপচয় হবে না। বরং অর্থের সাশ্রয় হবে।
প্রসঙ্গত, প্রায় ৮৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন সংসদ ভবন তৈরির জন্য টাটা প্রোজেক্টস বরাত জিতে নিয়েছে। তার সঙ্গে রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে ইন্ডিয়া গেট পর্যন্ত রাজপথের দু’পাশের এলাকা বা সেন্ট্রাল ভিস্টা ঢেলে সাজানোর জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছে মোদী সরকার। যা নিয়ে বিরোধীরা এই প্রশ্ন তুলেছে যে, কোভিড অতিমারির মধ্যে স্বাস্থ্য খাতে বা পরিযায়ী শ্রমিকদের সুরাহা দিতে অর্থ খরচ না করে মোদী সরকার কেন নয়াদিল্লী সাজাতে অর্থ অপচয় করছে? সেন্ট্রাল ভিস্টা প্রকল্পের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টেও মামলা হয়েছিল।
তারই শুনানিতে কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা যুক্তি দেন, এখন সরকারি ভবনগুলিতে সব মন্ত্রকের জায়গা হচ্ছে না। ফলে অনেক বাড়ি ভাড়া নিতে হয়েছে। তার জন্য বছরে ১ হাজার কোটি টাকা গুনতে হয়। ২০ হাজার কোটি টাকার সেন্ট্রাল ভিস্টা প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সচিবালয় তৈরি হবে। তার অন্তর্ভুক্ত ১০টি ভবনে সমস্ত মন্ত্রকের ঠাঁই হবে। মেহতা বলেন, ‘এখন নর্থ ও সাউথ ব্লক ৯০ একর জায়গা জুড়ে রয়েছে। এতখানি জায়গার অপচয়। কিন্তু অফিসারদের এক মন্ত্রক থেকে আর এক মন্ত্রকে ছুটতে হয়। কেন্দ্রীয় সচিবালয়ে এক জায়গাতেই ৫১টি মন্ত্রক ও দফতর থাকবে। সমন্বয় বাড়বে।’ সেন্ট্রাল ভিস্টা প্রকল্পে পরিবেশের ক্ষতির দিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলেও সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ ছিল। তবে মেহতার সাফাই, পরিবেশের সব দিকই খেয়াল রাখা হয়েছে।